প্রকাশের তারিখ:
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার | প্রবাস বুলেটিন
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার দাবিতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন।
আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর সোয়া দুইটার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে অংশ নেন শতাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী।
🔹 ছয় দিন ধরে আন্দোলনে শিক্ষকরা
এর আগে টানা ছয় দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। রোববার থেকে তাঁরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিন দফা দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। পুলিশের বাধায় তারা পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন।
গত মঙ্গলবার সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ এবং বুধবার শাহবাগ মোড় অবরোধের সময়ও পুলিশের বাধার মুখে পড়েন শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার নির্ধারিত “মার্চ টু যমুনা” কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
🔹 সরকারের প্রস্তাব ও শিক্ষকদের প্রত্যাখ্যান
আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে মূল বেতনের ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া (ন্যূনতম ২ হাজার টাকা) দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হতে পারে।
তবে শিক্ষকরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁদের দাবি—
-
অবিলম্বে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দিতে হবে,
-
পরবর্তী দুই ধাপে বর্ধিত ভাতা বাস্তবায়ন করতে হবে,
-
এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।
সি আর আবরার বলেন,
“যেখানে বাজেট সীমিত, সেখানে এর চেয়ে বেশি দেওয়া আপাতত সম্ভব নয়। তবে আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করছি।”
🔹 “দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চলবে”
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন,
“আমাদের দাবি একটাই—২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দিতে হবে। শিক্ষকরা আর কোনো আশ্বাস শুনবেন না। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চলবে।”
তিনি জানান, দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান কর্মবিরতি অনির্দিষ্টকাল চালু থাকবে এবং রোববার থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের পরিবারের সদস্যরাও এই আন্দোলনে যোগ দেবেন।
🔹 “শিক্ষকদের সম্মান ফিরিয়ে আনতে চাই”
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার পশ্চিম ফুলমতি হাইস্কুলের ৫৬ বছর বয়সী শিক্ষক আজিজার রহমান, যিনি অনশন শুরু করেছেন প্রথম দিন থেকেই, বলেন,
“যতক্ষণই লাগুক, অনশন চালিয়ে যাব। শিক্ষক হয়ে পরিবার চালাতে কষ্ট হয়। তবু সরকার আমাদের মূল্যায়ন করে না। আমি চাই, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এই গ্লানি বহন না করে—শিক্ষকেরা যেন মাথা উঁচু করে সমাজে বাঁচতে পারেন।”
সমাপ্তি মন্তব্য:
দাবি আদায়ে অটল এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীরা এখন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের সঙ্গে সমঝোতা না হলে এই অনশন দীর্ঘায়িত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
