📅 প্রকাশিত: সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মালয়েশিয়ায় বিদেশিদের ই-ভিসা আবেদনের নামে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল একটি আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট। সম্প্রতি দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ ‘কি মালয়েশিয়া’ (KEY MALAYSIA) নামের একটি ভুয়া ওয়েবসাইট শনাক্ত করেছে, যা আসল অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের অনুরূপভাবে সাজানো হয়েছিল। এর মাধ্যমে প্রকৃত ফির তুলনায় তিনগুণ পর্যন্ত অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঘটনায় গ্রেফতার বাংলাদেশি নারী
ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাবান এক বিবৃতিতে জানান, তদন্তে ৩২ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি নারীকে গ্রেফতারের মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ওই নারী সামাজিক ভ্রমণের ভিসায় মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করছিলেন এবং গত তিন বছর ধরে নিয়মিতভাবে দেশটিতে যাতায়াত করছিলেন।
সিন্ডিকেটের কার্যক্রম
-
তদন্তে জানা যায়, সিন্ডিকেটটি ২০২২ সাল থেকে সক্রিয়।
-
এ পর্যন্ত ৫২,৬৭২টি ই-ভিসা আবেদন এই ভুয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জমা হয়েছে।
-
প্রতিটি আবেদনে ৩০০ থেকে ৫০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত আদায় করা হতো, যেখানে আসল ই-ভিসা ফির পরিমাণ অনেক কম।
-
ওয়েবসাইটটিতে দুটি আলাদা সেবা দেওয়া হতো:
-
‘নিয়মিত ভিসা’ – অনুমোদন ৩ থেকে ৫ কার্যদিবসে।
-
‘জরুরি ভিসা’ – অনুমোদনের প্রতিশ্রুতি ২ থেকে ৩ কার্যদিবসে।
-
প্রতারণার কৌশল
ভুক্তভোগীদের অর্থ দেওয়ার পর প্রায়শই ভুয়া বার্তা পাঠানো হতো যে তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে ওয়েবসাইটের ‘লাইভ চ্যাট’ সেবার মাধ্যমে যোগাযোগ করলে পাসপোর্ট কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকিও দেওয়া হতো।
আইনি ব্যবস্থা
সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নারীকে অভিবাসন বিধিমালা ১৯৬৩ এর ৩৯ (বি) ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে পরবর্তী তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুত্রজায়া ইমিগ্রেশন অফিসে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার স্বামী, যিনি নিজেও বাংলাদেশি নাগরিক, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সতর্কতা
দাতুক জাকারিয়া শাবান বলেন, “এ ধরনের ভুয়া ওয়েবসাইট কেবল প্রতারণাই নয় বরং ইমিগ্রেশন বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং জনগণের আস্থা নষ্ট করে।” তিনি আরও জানান, নীতি অনুযায়ী ইমিগ্রেশন বিভাগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থান অব্যাহত রাখবে।
👉 মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ জনগণকে সতর্ক করে বলেছে, ভিসা সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য ও আবেদন শুধুমাত্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও অনুমোদিত প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই সম্পন্ন করতে।