প্রকাশিত: শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
পাকিস্তান অধিকৃত আজাদ কাশ্মীর অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও আধাসামরিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আটজন নিহত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে ইসলামাবাদের কেন্দ্রীয় সরকার। পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আজাদ কাশ্মীরের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছেন।
উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন
-
আট সদস্যের এই কমিটির প্রধান থাকছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ নিজেই।
-
সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের চার মন্ত্রী, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কেন্দ্রীয় নেতা রাজা পারভেজ আশরাফ ও কামার জামান কাইরা, এবং আজাদ কাশ্মীরের সাবেক প্রেসিডেন্ট সরদার মাসুদ খান।
-
প্রতিনিধি দলে যোগ দেবেন আজাদ কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোরুল হক, যিনি বিক্ষোভ শুরুর আগে থেকেই ইসলামাবাদের কাশ্মীর হাউসে অবস্থান করছেন।
শাহবাজ শরিফের আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ আজাদ কাশ্মীরের জনগণকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার সমস্যার সমাধানে আলোচনার পথ খোলা রাখতে চায়।
আন্দোলনের কারণ
আজাদ কাশ্মীরে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে কয়েক হাজার মানুষ যোগ দিয়েছেন। তাদের দাবিগুলো হলো:
-
জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ
-
দুর্বল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার
-
রাজনীতিবিদ, আমলা ও শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধা ও ভোগবিলাস বন্ধ
এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠন জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (এএসি)।
সেনাবাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
এএসি-র জ্যেষ্ঠ নেতা শওকত নবাজ মীর পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীকে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন,
“ইসলামাবাদ ও রাওয়ালপিন্ডি জনগণের প্রতিনিধিত্বের দাবি করলেও আসলে জনগণকেই দশকের পর দশক ধরে শোষণ ও দমন করছে। কথিত ‘আজাদ কাশ্মীর’ কোনোভাবেই মুক্ত নয়, বরং দীর্ঘ দাসত্বে আবদ্ধ।”
তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও সরকারের অবস্থানকে “মানুষ হত্যায় বেপরোয়া এক ডাইনির” সঙ্গে তুলনা করেন। একই সঙ্গে অভিযোগ করেন, সেনাপ্রধান আসিম মুনির ভারতের হিন্দুদের ‘কাফের’ বলে অভিযোগ তুললেও কাশ্মীরিদের রক্তেই তাঁর হাত ভেজা।
👉 বর্তমান সংকটের সমাধান হবে কি না, তা নির্ভর করছে ইসলামাবাদের আলোচনার উদ্যোগ কতটা আন্তরিক ও কার্যকর হয় তার ওপর।
