📅 ঢাকা | সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
রপ্তানিকারকদের নগদ অর্থের চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রা ও টাকা সোয়াপ সুবিধা চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ব্যবস্থার আওতায় রপ্তানিকারকরা এখন থেকে তাদের রপ্তানি আয়ের ডলার বা ইউরোসহ বৈদেশিক মুদ্রা না ভাঙিয়েই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য টাকার সুবিধা নিতে পারবেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করে।
🔹 কীভাবে কাজ করবে সোয়াপ সুবিধা
সোয়াপ হলো একটি সাময়িক মুদ্রা বিনিময় চুক্তি, যেখানে রপ্তানিকারক তার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংককে অস্থায়ীভাবে হস্তান্তর করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় শেষে একই পরিমাণ মুদ্রা ফেরত পাবেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি টাকার সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন।
অর্থাৎ, রপ্তানিকারক ডলার ধরে রাখার পাশাপাশি নগদ টাকার প্রবাহও বজায় রাখতে পারবেন—যা ব্যবসার তারল্য সংকট কাটাতে সহায়ক হবে।
🔹 মেয়াদ ও নিষ্পত্তির শর্ত
সার্কুলার অনুযায়ী,
- 
সোয়াপ সুবিধার সর্বোচ্চ মেয়াদ ৩০ দিন।
 - 
এটি রপ্তানিকারকের পুল অ্যাকাউন্ট বা রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবের বিপরীতে দেওয়া যাবে।
 - 
মেয়াদ শেষে লেনদেন অবশ্যই নিষ্পত্তি করতে হবে।
 - 
সোয়াপের হার বা “সোয়াপ পয়েন্ট” নির্ধারিত হবে দুই মুদ্রার সুদ বা লাভের হার পার্থক্যের ভিত্তিতে।
 
🔹 ঋণ নয়, সাময়িক বিনিময় চুক্তি
বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট করেছে—এই সোয়াপ কোনো ঋণ বা অর্থায়ন নয়, বরং এটি একটি অস্থায়ী বিনিময় চুক্তি।
ব্যাংকগুলোকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, তারল্য নিয়ন্ত্রণ ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রক্রিয়া কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রপ্তানিকারকদের লিখিতভাবে জানাতে হবে যে তারা চুক্তির শর্ত, বিনিময় হার ও ঝুঁকি সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন।
🔹 ব্যবহারের সীমা ও উদ্দেশ্য
সোয়াপ থেকে পাওয়া টাকা শুধুমাত্র রপ্তানিমুখী কাজে ব্যবহার করা যাবে—যেমন উৎপাদন ব্যয়, কাঁচামাল ক্রয়, পরিবহন খরচ ইত্যাদি।
কোনো জল্পনামূলক বা অপ্রাসঙ্গিক লেনদেনে এই অর্থ ব্যবহার করা যাবে না।
🔹 অর্থনৈতিক প্রভাব
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই উদ্যোগের ফলে—
- 
রপ্তানিকারকরা ডলার আগেভাগে বিক্রি না করেই নগদ টাকার প্রবাহ নিশ্চিত করতে পারবেন।
 - 
ডলার বাজারে চাপ কিছুটা হ্রাস পাবে।
 - 
রপ্তানি খাতের তারল্য সংকট নিরসনে সহায়তা মিলবে।
 
সব ধরনের সোয়াপ লেনদেন যথাযথভাবে নথিভুক্ত করে নিয়মিতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে বলেও সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
									 
					