প্রকাশিত: রোববার, ৫ অক্টোবর ২০২৫ |
কোরআন ‘অবমাননার’ অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৫ অক্টোবর) ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চাঁদ মিয়া আসামিকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আদালতের আদেশ ও তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য
প্রসিকিউশনের এসআই জাকির হোসেন জানান, তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে বলেন—
“অপূর্ব পাল কোরআন অবমাননার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে যে, কোরআন শরীফ হাতে নিয়ে প্রকাশ্যে ফেলে দেয় এবং পদদলিত করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে।”
আবেদনে আরও বলা হয়, তদন্তের স্বার্থে আসামিকে পরবর্তীতে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন হতে পারে। জামিনে মুক্তি পেলে সে পলাতক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এই বিবেচনায় আদালত অপূর্ব পালের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঘটনার সূত্রপাত ও গ্রেপ্তারের ঘটনা
ভাটারা থানার এসআই হাসমত আলী রোববার কোরআন অবমাননার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে অপূর্ব পালের বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তোলা হয়।
ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষুব্ধ জনতা রাত ১টার দিকে অপূর্বের ভাটারাস্থ বাসার সামনে জড়ো হতে থাকে। খবর পেয়ে ভাটারা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অপূর্বকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করে।
পুলিশ জানায়, উত্তেজিত জনতা তাকে আটক করতে বাধা দেয় এবং অপূর্বের ওপর মারধর চালায়। এসময় জনতা পুলিশের ওপরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়।
রাত পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ অপূর্বকে হেফাজতে নিতে সক্ষম হয় এবং থানায় নিয়ে যায়।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন,
“অপূর্ব পালের ফেসবুক আইডিতে কোরআন অবমাননার ভিডিওর সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে তাকে আটক করতে গেলে জনতার বাধার মুখে পড়তে হয়। পরিবারের সদস্যরা নিরাপদে আছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের প্রভাষক আসিফ বিন আলী জানান,
“অপূর্ব পাল আমাদের বিভাগের বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী। সে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়।”

