প্রকাশিত: সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রবাস বুলেটিন
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ছাগলের হাড়ে আঘাত পেয়ে আজেনা বেগম রোজিনা (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, তিনি অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, আগে থেকেই থাকা শারীরিক জটিলতার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আজেনা বেগম। পরদিন রোববার বেলকা ইউনিয়নের পশ্চিম বেলকা গ্রামের দকিদার মোড়ে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
ঘটনার বিবরণ
স্বজন ও স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, অসুস্থ একটি ছাগলের বাচ্চা জবাইয়ের সময় আজেনা বেগম হাড়ের আঘাতে হাতে ক্ষত পান। কয়েক দিনের মধ্যে ক্ষতস্থানে ফোঁসকা ও ব্যথা দেখা দেয়।
প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন, কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে রংপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। সেখানেই তার মৃত্যু ঘটে।
চেয়ারম্যান ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বক্তব্য
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বলেন,
“মৃত নারী নিজেই অসুস্থ ছাগল জবাই করার সময় আঘাতপ্রাপ্ত হন। অ্যানথ্রাক্সে মারা গেছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়, কারণ কোনো নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।”
তিনি জানান, বর্তমানে ইউনিয়নের অন্তত ১১ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন, ফলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক বলেন,
“ওই নারীর হাতে ছোট দুটি ফোঁসকা ছিল, রক্তচাপ কমে গিয়েছিল এবং শ্বাসকষ্টও ছিল। তাই তাকে রংপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। তার মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে হয়েছে কি না, তা নমুনা পরীক্ষার পর জানা যাবে।”
অ্যানথ্রাক্স পরিস্থিতি ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুসারে, গত এক সপ্তাহে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অন্তত ২৫ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময়ে শতাধিক গবাদিপশুর মৃত্যু ঘটেছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে টিকাদান অভিযান, মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও সচেতনতামূলক সভা চলছে।
আক্রান্ত বা মৃত পশু জবাই না করার নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যাখ্যা
অন্যদিকে, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে, আজেনা বেগম রোজিনার মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে নয়; তিনি আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
পোস্টে সাধারণ মানুষকে গুজব ও বিভ্রান্তি থেকে সতর্ক থাকতে এবং স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
									 
					