প্রকাশিত: শনিবার, ৩০ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১৩টি দানসিন্দুক খুলে এবারও মিলেছে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও স্বর্ণালংকার। শনিবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে সিন্দুক খোলার পর গণনার কাজ শুরু হয়। প্রাথমিক হিসাবে ৩২ বস্তা ভর্তি টাকা পাওয়া গেছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার অলংকারও মিলেছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
প্রতি চার মাসে সিন্দুক খোলা হয়
প্রতি চার মাস অন্তর মসজিদের দানসিন্দুক খোলা হয়। সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিল সিন্দুক খোলার সময় রেকর্ড ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা, হীরা ও সোনার গয়না পাওয়া গিয়েছিল। এবারও সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে প্রশাসন।
গণনার দায়িত্বে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এরশাদুল আহমেদের উপস্থিতিতে দানসিন্দুকগুলো খোলা হয়। পরে বস্তায় ভরা টাকা মেঝেতে ঢেলে গণনার কাজ চলছে। পুলিশ প্রশাসন পুরো প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করছে।
দানের অর্থের ব্যবহার
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানিয়েছেন, পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে বাকি অর্থ ব্যাংকে জমা রাখা হয়। বর্তমানে ব্যাংকে প্রায় ৯১ কোটি টাকা জমা রয়েছে। এর লভ্যাংশ দিয়ে জেলার মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, অসহায় মানুষ ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহযোগিতা করা হয়।
অনলাইনে দান করার সুবিধা
শুক্রবার পাগলা মসজিদের নিজস্ব ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এখন ঘরে বসেই অনলাইনে দান করা যাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, “এই প্ল্যাটফর্ম মসজিদের দানব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও স্বচ্ছ করবে।”
ইতিহাস ও ধর্মীয় বিশ্বাস
শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়—এমন বিশ্বাস থেকে দূরদূরান্তের মানুষ এখানে এসে দান করেন। নগদ অর্থের পাশাপাশি স্বর্ণালংকার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি পর্যন্ত দান করার নজির রয়েছে।
👉 পাগলা মসজিদের সিন্দুক খোলার প্রতিটি মৌসুমেই মানুষের আগ্রহ ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। এবারও দানসিন্দুকের দান অতীতের সব রেকর্ড ভাঙতে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।