প্রকাশের তারিখ: রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই গাজায় সশস্ত্র সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন তরুণ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সালেহ আল জাফারাবি (২৮)। চলমান যুদ্ধের মানবিক চিত্র ও মাটির বাস্তবতা তুলে ধরার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক পরিসরে পরিচিতি পেয়েছিলেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই বহু ফিলিস্তিনি নিজ গৃহে ফিরে যান। সেই সময়ের এক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রেস লেখা জ্যাকেট পরা এক ব্যক্তি টর্চের আলোয় চিৎকার করে বলছেন, “যাদের কাছে ইন্টারনেট নেই, তাদের আমরা জানাচ্ছি, যুদ্ধ শেষ হয়েছে।” পরে জানা যায়, তিনি ছিলেন সাংবাদিক সালেহ আল জাফারাবি।
ফিলিস্তিনি সূত্রের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা আরবি জানায়, গাজার সাবরা এলাকায় সশস্ত্র মিলিশিয়ার গুলিতে আল জাফারাবি নিহত হন। তিনি নিখোঁজ ছিলেন রোববার সকাল থেকে। পরবর্তীতে যাচাইকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রেস লেখা ফ্ল্যাক জ্যাকেট পরা অবস্থায় একটি ট্রাকে তার মরদেহ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, সংঘর্ষটি হামাস নিরাপত্তা বাহিনী ও দগমুশ গোত্রের যোদ্ধাদের মধ্যে হয়েছিল। যদিও স্থানীয় প্রশাসন এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আল-জাজিরা আরবিকে বলেন, “এই সংঘর্ষটি ইসরায়েলি দখলদারির সঙ্গে যুক্ত এক সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ঘিরে ঘটেছিল।” তার দাবি, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর দক্ষিণ গাজা থেকে ফিরে আসা বাস্তুচ্যুতদের হত্যার সঙ্গে ওই মিলিশিয়ার সদস্যরা জড়িত ছিল।
সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, গাজা উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনো অতি নাজুক।
গত জানুয়ারিতে আল-জাজিরার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আল জাফারাবি বলেছিলেন,
“এই ৪৬৭ দিনে আমি যা দেখেছি, তা আমার স্মৃতি থেকে কখনো মুছে যাবে না। প্রতিটি মুহূর্তে মনে হয়েছে, পরের সেকেন্ডটি হয়তো আমার জীবনের শেষ।”
তিনি আরও জানান, তার কাজের কারণে বহুবার ইসরায়েলের দিক থেকে হুমকি পেয়েছিলেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর এ পর্যন্ত গাজায় ২৭০ জনের বেশি সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মী নিহত হয়েছেন—যা সাংবাদিকদের জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বর্তমানে গাজায় তৃতীয় দিনের মতো যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে এবং জিম্মি-বন্দী বিনিময়ের প্রক্রিয়া চলছে।
সূত্র: আল জাজিরা, আল-জাজিরা আরবি
									 
					