প্রকাশিত: বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) বড় ধরনের ভরাডুবির মুখে পড়েছে। নির্বাচনের আগে ধারণা করা হয়েছিল, ভোট হবে ত্রিমুখী এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। বিএনপিও আশাবাদী ছিল, তাদের ছাত্র সংগঠনই সংখ্যাগরিষ্ঠ পদে বিজয়ী হবে। কিন্তু ফলাফলে বিপরীত চিত্র উঠে এসেছে—বেশির ভাগ পদই গেছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’-এর ঝুলিতে।
অপ্রত্যাশিত পরাজয়
-
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের এই পরাজয় বিএনপি ও প্রগতিশীল ধারার সমর্থকদের কাছে ভূমিধস ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
-
প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঠে থাকলেও, ছাত্রদল বুঝতেই পারেনি তাদের অবস্থান কতটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
শিবিরের উত্থান
ছাত্রশিবির এর আগে কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়ের কাছাকাছি আসতে পারেনি। এবার তাদের সাফল্যের পেছনে কয়েকটি বিষয় কাজ করেছে—
-
জামায়াতে ইসলামী সর্বাত্মক সহায়তা দিয়েছে।
-
বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনো ক্ষমতায় না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে পুরোনো অভিযোগ ছিল না।
-
জুলাই আন্দোলনের সময় গড়ে ওঠা ‘গুপ্ত সেল’ কৌশল, যা ছাত্রদল রপ্ত করতে পারেনি।
ছাত্রদলের দুর্বলতা
-
ছাত্রদল এবারও বড় চিত্র বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।
-
দীর্ঘ আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীরা চেয়েছিল একটি ক্লিন ইমেজের সংগঠন। কিন্তু অতীতে ক্ষমতায় থেকে দখলদারি, চাঁদাবাজি ও দাপট দেখানো সংস্কৃতি থেকে বের হতে পারেনি ছাত্রদল।
-
বিএনপির অন্য অঙ্গসংগঠনগুলোর মতো ছাত্রদলও এই নেতিবাচক ‘পারসেপশন’ থেকে মুক্ত হতে পারেনি।
ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন
বিশ্লেষকদের মতে—
-
ডাকসুর এই ফলাফল বিএনপির জন্য সতর্ক সংকেত।
-
জাতীয় নির্বাচনের আগে ডাকসু ছিল একটি টেস্ট। প্রথম পরীক্ষাতেই ছাত্রদল ব্যর্থ হয়েছে।
-
যদি বিএনপি নিজেদের রাজনীতিতে সংস্কার ও শুদ্ধি অভিযান শুরু না করে, তবে একই ধারা জাতীয় পর্যায়েও দেখা যাবে।
করণীয়
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপিকে এখন—
-
নিজেদের বড় দল ভাবনার পরিবর্তে ‘আন্ডারডগ’ মনোভাব নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে।
-
অঙ্গসংগঠনের সংখ্যা কমিয়ে ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব সামনে আনতে হবে।
-
জনগণকে বিশ্বাসযোগ্য পরিবর্তনের প্রমাণ দেখাতে হবে, শুধু মুখের বুলি নয়।