প্রকাশিত: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি জবানবন্দি দেন।
নাহিদের জবানবন্দি
মামলার শেষ সাক্ষী হিসেবে ধরা হওয়া নাহিদ ইসলাম বলেন—
-
২০২৪ সালের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা ও রাজাকারের নাতিপুতি আখ্যা দিয়ে কোটাপ্রথার পক্ষে বক্তব্য দেন। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সরকার শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়নের বৈধতা তৈরি করে।
-
এই মন্তব্যে সারাদেশের ছাত্রসমাজ অপমানিত বোধ করে এবং সেদিন রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়।
-
১৫ জুলাই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন, আন্দোলন ঠেকাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এরপর দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ ও চট্টগ্রামের ওয়াসিমসহ ছয়জন নিহত হন।
-
১৭ জুলাই রাতে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং ১৮ জুলাই সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নামে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধে অংশ নেয়। ওইদিন বহু ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হয়। রাতে সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
-
১৯ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী কর্মীরা আবারও নির্বিচারে গুলি চালায়, এতে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ে। এ সময় সরকার ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নেয়, ফলে আন্দোলনের খবর প্রচারিত হয়নি।
মামলার প্রেক্ষাপট
এদিন দুপুরে মামলার ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দির জেরা শেষ হয়। তিনি গত সোমবার ও মঙ্গলবার সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
মামলার তিন আসামি হলেন—
-
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
-
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল
-
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন (যিনি এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ হিসেবে ইতোমধ্যেই জবানবন্দি দিয়েছেন)
আজকের সাক্ষ্যগ্রহণে আবদুল্লাহ আল-মামুনও ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
পরবর্তী কার্যক্রম
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্যের মাধ্যমে সাক্ষী উপস্থাপন শেষ হবে। এরপর তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির শুনানি সমাপ্তির দিকে অগ্রসর হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
👉 মামলার অগ্রগতি ও ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত জানতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।