মঙ্গলবার, ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

প্রকাশের তারিখ: বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রবাস বুলেটিন

মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে এমন বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা পাঠাতে, যারা নতুনভাবে নির্ধারিত ১০টি কঠোর মানদণ্ড পূরণ করতে সক্ষম

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৭ অক্টোবর পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ হাইকমিশনকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে যোগ্য এজেন্সির নাম জমা দিতে হবে। তালিকাটি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করবে এবং বৈধ শ্রমিক প্রেরণ প্রক্রিয়ার জন্য ব্যবহার করবে।

🔹 নতুন প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য

চিঠিতে বলা হয়েছে, এই নতুন প্রক্রিয়ার লক্ষ্য হলো বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে অনুমোদিত বেসরকারি এজেন্সির সংখ্যা যৌক্তিকীকরণ করা। এর মাধ্যমে একটি উদ্দেশ্যভিত্তিক ও যোগ্যতাভিত্তিক যাচাই প্রক্রিয়া চলবে, যা নৈতিক ও গঠনমূলক শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করবে।

🔹 শ্রমিক অধিকারকর্মীদের শঙ্কা

তবে শ্রমিক অধিকারকর্মীরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তারা মনে করছেন নতুন প্রক্রিয়া পুরোনো সিন্ডিকেট ব্যবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। কুয়ালালামপুরভিত্তিক শ্রমিক অধিকার বিশেষজ্ঞ অ্যান্ডি হল বলেন, “যদি মানদণ্ডগুলো বাস্তবিকভাবে প্রয়োগ হয়, অনেক এজেন্সি তালিকায় টিকে থাকবে না। এটি র‍্যাশনালাইজেশন নয়, বরং ‘সিন্ডিকেশন’।”

🔹 নির্বাচনের মানদণ্ড

মালয়েশিয়া সরকার যে ১০টি মানদণ্ডে বেসরকারি এজেন্সি বাছাই করবে, তা হলো:

  1. ন্যূনতম ৫ বছরের লাইসেন্সধারী হতে হবে।

  2. গত ৩ বছরে অন্তত ৩ হাজার শ্রমিক প্রেরণের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

  3. অন্তত ৩টি দেশে শ্রমিক প্রেরণের রেকর্ড থাকতে হবে।

  4. কমপক্ষে ১০,০০০ বর্গফুট স্থায়ী অফিস, যা ৩ বছর ধরে কার্যক্রমে রয়েছে।

  5. সুশৃঙ্খল আচরণের সনদ, বৈধ লাইসেন্স ও আইনি কার্যক্রমের প্রমাণপত্র থাকতে হবে।

  6. আন্তর্জাতিক নিয়োগদাতার কাছ থেকে ন্যূনতম ৫টি লিখিত সুপারিশপত্র থাকতে হবে।

  7. নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র, যেখানে আবাসনের সুবিধা থাকবে।

  8. অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি কর্মী বাছাই ও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও আইনি হতে হবে।

🔹 পুরোনো সিন্ডিকেটের প্রভাব

আগের ব্যবস্থায় মাত্র ১০০টি বাংলাদেশি এজেন্সিকে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যা সমালোচিত হয়েছিল একচেটিয়া ও শোষণমূলক হিসেবে। অধিকার সংগঠনগুলোর মতে, সিন্ডিকেটের কারণে শ্রম অভিবাসনের খরচ বাড়ে, প্রতিযোগিতা সীমিত হয় এবং বহু লাইসেন্সপ্রাপ্ত এজেন্সি প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ে।

মালয়েশিয়া সরকার বলছে, নতুন কাঠামো স্বচ্ছতা ও নৈতিক নিয়োগ নিশ্চিত করবে। তবে পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা, কঠোর যোগ্যতা মানদণ্ড শেষ পর্যন্ত অল্প কিছু প্রভাবশালী এজেন্সিকে সুবিধা দেবে—পুরোনো সিন্ডিকেটের নতুন রূপে পুনরাবৃত্তি হতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, যেহেতু বাংলাদেশের মন্ত্রণালয় সমঝোতা স্মারক পরিবর্তনে আগ্রহী নয়, এটি কিছুটা হলেও ভালো উদ্যোগ। তবে নির্বাচন ও যাচাই প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা আবশ্যক, যাতে কোনো এজেন্সি ক্ষোভবোধ না করে।

Leave A Reply

বৈদেশিক কর্মসংস্থান, অভিবাস ও প্রবাস জীবন সংক্রান্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

যোগাযোগ

সিটি হার্ট শপিং কমপ্লেক্স (১১তম ফ্লো), রুম ১২/৮, ৬৭, নয়াপল্টন, ভিআইপি রোড, ঢাকা-১০০০, ফোন: +৮৮০ ১৫৩৩-১৯০৩৭১, ইমেইল: info@probashbulletin.com

Exit mobile version