প্রকাশের তারিখ: ৪ নভেম্বর ২০২৫
লেখক: প্রবাস বুলেটিন ডেস্ক
দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় খুলতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। তবে এবার কঠোর শর্ত আরোপ করে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম সীমিত করার ইঙ্গিত দিয়েছে কুয়ালালামপুর।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারকে এক চিঠি পাঠিয়ে জানায়, নতুন শর্ত পূরণে সক্ষম রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর তালিকা আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে পাঠাতে হবে।
🔶 নতুন ১০টি কঠোর শর্ত
নতুন শর্ত অনুযায়ী,
- 
ন্যূনতম ৫ বছরের সফল কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা,
 - 
অন্তত ৩ হাজার কর্মী প্রেরণের রেকর্ড,
 - 
তিনটি দেশে কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা,
 - 
এবং ১০ হাজার বর্গফুট আয়তনের স্থায়ী অফিস থাকার প্রমাণ দিতে হবে।
 
অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব শর্ত বাস্তবে পূরণ করা অত্যন্ত কঠিন, ফলে বাজারটি আবারও কিছু নির্দিষ্ট প্রভাবশালী এজেন্সির হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
🔶 বায়রার সমালোচনা: ‘পুরোনো সিন্ডিকেটের বৈধতা’
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন,
“এই শর্তগুলোর বেশিরভাগই বাস্তবসম্মত নয়। বাংলাদেশে রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য ১০ হাজার বর্গফুটের অফিসের কোনো প্রয়োজন নেই—৬০০ বর্গফুটই যথেষ্ট। এসব শর্তের মাধ্যমে পুরোনো সিন্ডিকেটকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
🔶 পটভূমি: বন্ধ-চালু-আবার বন্ধ
বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০ লাখ বাংলাদেশি কর্মী বিভিন্ন খাতে কর্মরত।
তবে ২০২৪ সালের মে মাসে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে নতুন কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি।
এর আগে ২০১৮ সালেও একই অভিযোগে বাজার বন্ধ হয়েছিল। তিন বছর পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে নতুন চুক্তির মাধ্যমে তা পুনরায় চালু হয় এবং ২০২২ সালের আগস্টে ১০০ অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো শুরু হয়।
🔶 বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এবারও যদি বাজার উন্মুক্তভাবে চালু না করা হয়, তাহলে একই ধরনের অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অতিরিক্ত খরচের বোঝা আবারও সাধারণ কর্মীদের ওপর পড়বে।
তারা সরকারের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপ দাবি করে বলেন, “বাজারটি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা এবং নতুন সিন্ডিকেট গঠনের সুযোগ বন্ধ করাই এখন প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।”
📌 সূত্র: মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়, অভিবাসন বিশেষজ্ঞ, বায়রা
									 
					