বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘মাত্র তিন মাস আগে তোলা সেই চার হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল? এটা একটা অবাক করা বিষয়। টাকা কোথায়?’ বেক্সিমকোর এক হাউজিং প্রকল্পে আইএফআইসি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘আমার বন্ড’ ছেড়ে তোলা টাকা নিয়ে এমন প্রশ্ন তোলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘বেক্সিমকো শিল্প পার্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
গতকাল দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বেক্সিমকোর কর্মীরা আরও ৭০০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ চায়। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘একটা প্রতিষ্ঠানের যদি ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা চলতি সম্পদ থাকে, তাহলে তার ৬০ কোটি টাকা বেতন দেওয়া তো সেকেন্ডের ব্যাপার। এত সম্পদ থাকলে এলসি খোলাও লাগে না, ব্যাংকের সুবিধারও দরকার পড়ে না।’
সরকার যথেষ্ট উদার ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠান চালুর ব্যাপারে প্রচেষ্টা চালিয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকার তাদের (বেক্সিমকো) পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র সহযোগিতা পায়নি। সরকার বাধ্য হয়ে এখানে প্রশাসক নিয়োগ করেছে। প্রশাসককে কোনো ধরনের সাহায্য করা হয়নি। বলা হয়েছে, আইনজীবীর নিষেধ আছে কোনো ধরনের তথ্য শেয়ার না করার জন্য।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকোর ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি রিটেইনড আর্নিং রয়েছে জানিয়ে বিষয়টির ফরেনসিক নিরীক্ষা করা হবে কি না, জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছুই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘরে চুরি হয়েছে, ঘরই তো নেই।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রথমে জেনেছিলাম যে তাদের ২৩ হাজার কোটি টাকার দায় রয়েছে। পরে জানলাম, তাদের প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার দায় রয়েছে। ২৩ হাজার কোটি টাকার দায় ধরে নিয়েই চেষ্টা করেছিলাম যে প্রতিষ্ঠানটি কোনো রকমে যাতে চালু হয়। সরকার খুবই দায়িত্বশীল ছিল এটি চালুর জন্য। কারণ, এটা একটি জাতীয় সম্পদ, এখানে বহু শ্রমিক নিয়োজিত।’
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, সরকার তার দায়িত্বের জায়গা থেকে প্রতি মাসে ৬০ কোটি টাকা করে বেতন দিয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল ছিল।
শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা পরিষদ এবং বিশাল সরকারি দল যখন একসঙ্গে নিয়োজিত হয়ে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছিল, তখন দুর্যোগপূর্ণ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ বশির। তিনি বলেন, ফৌজদারি বিধি লঙ্ঘন করে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। অসম্মানিত করা হচ্ছে শ্রমিক সমাজকে এবং পোশাক খাতকে।