গাজা, ১০ এপ্রিল ২০২৫: ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার প্রধান শহর গাজা সিটির শেজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলের চালানো এক ভয়াবহ বিমান হামলায় অন্তত ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বহুতল একটি আবাসিক ভবন লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকেই আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চিকিৎসাকর্মীদের বরাতে জানা যায়, হামলায় ভবনটির আশপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা শেজাইয়া এলাকা থেকে হামলার পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের জন্য দায়ী হামাসের এক সদস্যকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালিয়েছে। তবে এ হামলায় কোন নেতাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি ইসরায়েল।
ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা বেসামরিক মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল। তবে বাস্তবতা ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছে। শেজাইয়ার এ হামলার পাশাপাশি গাজার অন্যান্য অংশেও ইসরায়েলি বাহিনীর পৃথক অভিযানে আরও ৯ জন নিহত হয়েছেন। ফলে বুধবার একদিনেই মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে।
রয়টার্স জানায়, গত সপ্তাহেই ইসরায়েলি বাহিনী শেজাইয়া থেকে সাধারণ বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপরই ওই এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে তারা। ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন দফার আক্রমণে ইসরায়েল গাজায় ফের বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান জোরদার করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মার্চের মাঝামাঝি থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, যুদ্ধবিরতির চেষ্টাগুলো বারবার ব্যর্থ হওয়ার কারণে মানবিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আহত ও বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ও কার্যকর যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘ।