ঢাকা, ১০ এপ্রিল ২০২৫: আজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলবে প্রথম দিনের পরীক্ষা। এবার দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার ২৮১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সুষ্ঠু, নকলমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল নিষিদ্ধকরণসহ নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা।
প্রথম দিনে কোন কোন পরীক্ষা
শিক্ষা বোর্ডগুলোর নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আজ বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মাদরাসা বোর্ডের আওতায় হবে কুরআন মাজিদ ও তাজবিদ পরীক্ষা, আর কারিগরি বোর্ডের অধীনে নেওয়া হবে বাংলা-২ (দাখিল ও ভোকেশনাল) পরীক্ষা।
পরীক্ষার্থীদের জন্য ১৪ দফা নির্দেশনা
সব বোর্ড পরীক্ষার্থীদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১. এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে (৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যে) অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে।
২. প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা নিতে হবে।
৩. প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং উভয় পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না।
৪. পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই প্রবেশপত্র সঙ্গে আনতে হবে। তাদের প্রবেশপত্র নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিকট থেকে পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে তিনদিন পূর্বে সংগ্রহ করবে।
৫. শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলো এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে প্রেরণ করবে।
৬. পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমে তার পরীক্ষার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
৭. পরীক্ষার্থীকে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে।
৮. প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল নিবন্ধনপত্রে বর্ণিত বিষয়/বিষয়সমূহের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই ভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে না।
৯. কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা (সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক) নিজ বিদ্যালয়ে/প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসনবিন্যাস করতে হবে।
১০. পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।
১১. কেন্দ্রসচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি/পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবেন না।
১২. সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির জন্য একই উপস্থিতি পত্র ব্যবহার করতে হবে।
১৩. ব্যবহারিক পরীক্ষা নিজ নিজ কেন্দ্র/ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে।
১৪. পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে পুনঃনিরীক্ষার জন্য অনলাইনে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
কেন্দ্র নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা
এবারও পরীক্ষার্থীদের নিজ বিদ্যালয়ে নয়, ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে প্রশ্ন ফাঁসসহ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো যায়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পরীক্ষার সময় কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন থাকবে প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।