ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু উত্তর গাজা সফরে গিয়ে সেনাদের উদ্দেশে বলেছেন, “হামাসকে আরও আঘাত করা হবে”। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানের প্রেক্ষাপটে এ বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নেতানিয়াহু উত্তর গাজায় সামরিক ঘাঁটিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করেন। তিনি সেনাদের সামনে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একটি সাম্প্রতিক পোস্টের কথা উল্লেখ করে বলেন, “খামেনি আবারও ইসরায়েল ধ্বংসের আহ্বান জানিয়েছেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার সময়ও তিনি এই হুমকি দিয়েছেন।”
অবরোধ ও আক্রমণের ধারাবাহিকতা
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় হামাসের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির কয়েক দফা চেষ্টা হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সর্বশেষ ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে নতুন করে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী এবং উত্তর গাজার বিস্তীর্ণ অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
ফলে নতুন করে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। গাজার মানবিক পরিস্থিতি চরমে পৌঁছেছে।
জিম্মি সংকট ও সামরিক চাপের কৌশল
নেতানিয়াহু ও ইসরায়েলের শীর্ষ কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন, হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের উদ্ধারে কেবলমাত্র সামরিক চাপে ফল পাওয়া সম্ভব।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ২৫১ জন জিম্মি আটকে রাখা হয়েছিল, যার মধ্যে এখনো ৫৮ জন গাজায় আটকা, এবং তাদের মধ্যে মাত্র ২৪ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনে ভয়াবহ মানবিক ক্ষয়ক্ষতি
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজারেরও বেশি। বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপে নিখোঁজ।
কৌশলগত বার্তা ও নেতানিয়াহুর অবস্থান
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর ছিল নেতানিয়াহুর একটি কৌশলগত পদক্ষেপ—সেনাদের মনোবল বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ মহলে হামাসবিরোধী কঠোর অবস্থান পুনরায় স্পষ্ট করার প্রচেষ্টা।
সূত্র: এএফপি ও টাইমস অব ইসরায়েল