আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২০ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আবারও উত্তাল জনস্রোত। অভিবাসন, গাজা এবং ইউক্রেনসংক্রান্ত নীতির প্রতিবাদে দেশটির শত শত শহরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক, শিকাগোসহ প্রধান শহরগুলোতে হাজার হাজার মানুষ শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাস্তায় নামেন।
এই বিক্ষোভের পেছনে অন্যতম আয়োজক সংগঠন ‘৫০৫০১’, যার প্রতিপাদ্য— “৫০ অঙ্গরাজ্যে ৫০টি বিক্ষোভ, ১টি আন্দোলন”। দিনটিকে তারা ঘোষণা করেছে ‘ন্যাশনাল ডে অব অ্যাকশন’ নামে।
হোয়াইট হাউস ঘেরাও, প্ল্যাকার্ডে প্রতিবাদ
টেলিভিশন ফুটেজে দেখা যায়, হোয়াইট হাউসের সামনে লাফায়েট স্কয়ারে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান-সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। এসব প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল:
-
“Workers should have the power”
-
“No Kingship”
-
“Stop Arming Israel”
-
“Immigrants are welcome here”
-
“Resist Tyranny”
তারা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে শ্রমিক ছাঁটাই, অভিবাসী বিতাড়ন এবং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ-সংক্রান্ত বিদেশনীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গাজা ও ইউক্রেন ইস্যুতে দৃঢ় বার্তা
বিক্ষোভকারীদের অনেককে ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে এবং কেফিয়েহ গলায় জড়িয়ে অংশ নিতে দেখা গেছে। তারা ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের’ নিন্দা জানান এবং “Free Palestine” বলে স্লোগান দেন।
অন্যদিকে ইউক্রেনপন্থী বিক্ষোভকারীরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান নিতে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
অভিবাসন নীতি ও শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অনেকেই অভিবাসনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। হোয়াইট হাউসের সামনে এক বিক্ষোভকারী বলেন,
“ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসীদের বহিষ্কারে আইনের অপব্যবহার করছে। এখন প্রতিবেশীদের রক্ষা করাই আমাদের দায়িত্ব।”
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে বহু বিদেশি শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব শিক্ষার্থীদের অনেকে পূর্বে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিমালা ও সমালোচনা
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর একাধিক বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে অন্যতম হল সরকারি দক্ষতা বিভাগ (DOGE) গঠন এবং এর দায়িত্বে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ককে নিয়োগ। এরপর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় ২ লাখের বেশি চাকরি বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্যসেবা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে তাঁর প্রশাসনের নীতিমালা নিয়েও সমালোচনা জোরালো হয়েছে।
আরও আন্দোলনের ঘোষণা
‘৫০৫০১’ গোষ্ঠী জানিয়েছে, আগামী ১ মে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পরবর্তী কর্মসূচি ‘May Day Strong’ পালিত হবে। এ কর্মসূচিতে আরও ব্যাপক অংশগ্রহণ আশা করা হচ্ছে।