আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রবাস বুলেটিন
বিশ্ব ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস আর নেই। গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। ভ্যাটিকান পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেলের এক ঘোষণায় এই খবর বিশ্ববাসীর সামনে আসে। পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে পোপের মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করেন কার্ডিনাল কেভিন ফারেল।
এক আবেগঘন ঘোষণায় কার্ডিনাল ফারেল বলেন, “প্রিয় ভাই ও বোনেরা, গভীর বেদনার সঙ্গে আমাদের হোলি ফাদার ফ্রান্সিসের মৃত্যুর সংবাদ ঘোষণা করতে হচ্ছে। আজ সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে রোমের বিশপ ফ্রান্সিস ফাদারের কাছে ফিরে গেছেন।”
পোপের প্রয়াণ ও ভ্যাটিকানের পরবর্তী করণীয়
পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পরপরই ক্যামেরলেঙ্গোর (ভ্যাটিকান প্রশাসনের অন্তর্বর্তী প্রধান) দায়িত্বভার গ্রহণ করেন কার্ডিনাল কেভিন ফারেল। এই পদে তাঁকে ২০১৯ সালে মনোনয়ন দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস নিজেই। এখন তাঁর ওপর বর্তেছে নতুন পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ভ্যাটিকান পরিচালনার গুরুদায়িত্ব।
কার্ডিনাল কেভিন ফারেলের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
১৯৪৭ সালে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে জন্ম নেওয়া কেভিন ফারেল স্পেন ও ইতালিতে ধর্মতত্ত্ব শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ সময় গির্জা প্রশাসনে কাজ করেন এবং ২০০৭ সালে ডালাসে বিশপ হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০১৬ সালে তাঁকে ভ্যাটিকানে নিয়ে আসেন পোপ ফ্রান্সিস এবং কার্ডিনাল পদে উন্নীত করেন।
একটি যুগের অবসান
পোপ ফ্রান্সিসের প্রকৃত নাম ছিল জর্জ মারিও বারগোগ্লিও। ১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট পদত্যাগের পর ২০১৩ সালে তিনি পোপ নির্বাচিত হন। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ হিসেবেও তিনি ইতিহাসে স্মরণীয়।
শারীরিক অসুস্থতা ও শেষ দিনগুলো
গত ফেব্রুয়ারিতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্টজনিত জটিলতার কারণে তাঁকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে কিছুদিন আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও তাঁর শারীরিক অবস্থার আর উন্নতি হয়নি।
উদার চিন্তাধারার এক ধর্মনেতা
পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন আধুনিক বিশ্বে এক উদার চিন্তাধারার ধর্মনেতা। তিনি কেবল ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের মধ্যেই নয়, বরং বিভিন্ন ধর্ম ও মতের মানুষের মধ্যে সংলাপ ও সহাবস্থানের আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। গরিবদের পক্ষে কথা বলা, পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার অবস্থান নেওয়া এবং গির্জার অভ্যন্তরীণ সংস্কার উদ্যোগের জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে সম্মানিত হন।