স্টাফ রিপোর্টার | প্রবাস বুলেটিন
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বৈরিতা। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় চার ঘণ্টা ধরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল সূত্র।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা কলেজের কিছু শিক্ষার্থী সিটি কলেজের কাছে গিয়ে ইটপাটকেল ছুড়লে সংঘর্ষের সূচনা হয়। আগের দিন ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে এ উত্তেজনার সৃষ্টি হয় বলে জানায় নিউ মার্কেট থানার ওসি মোহসিন উদ্দিন।
চার ঘণ্টার উত্তেজনা
সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে উভয় কলেজের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিলে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের মাধ্যমে। এ সময় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সিটি কলেজের নামফলক খুলে নিতে দেখা যায়, যা পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তোলে।
পরে বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে চলে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা
সংঘর্ষে আহত হয়ে অন্তত ছয়জন শিক্ষার্থী—আদিব, লিয়ন, ফজলে হাসান, রাজিন, নাজমুস সাকিব ও আহসান শামীম—প্রথমে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান, পরে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আহসান শামীম, সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী, জানান: “আমরা কলেজ বাস থেকে নামার পরই অতর্কিত হামলার শিকার হই।”
অন্যদিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ফজলে হাসান বলেন, “গতকাল আমাদের ছোটভাইদের মারধর করে তাদের অশ্লীল ছবি তোলা হয়। আজ সে ঘটনার প্রতিবাদেই এই সংঘর্ষ হয়েছে।”
অতীত ঘটনার পুনরাবৃত্তি
এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ নতুন নয়। চলতি মাসের ১৫ তারিখেও একই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। এছাড়া গত বছর সেপ্টেম্বর, নভেম্বর ও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের মধ্যে সংঘর্ষে জড়ানোর একাধিক ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে পূর্বে পুলিশের উদ্যোগে পাঁচটি কলেজ ও দুটি পাবলিক কলেজের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। কমিটির লক্ষ্য ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছোটখাটো বিরোধ যেন বড় আকার ধারণ না করে, তা নিশ্চিত করা। কিন্তু সাম্প্রতিক সংঘর্ষগুলো থেকে স্পষ্ট, এ উদ্যোগ বাস্তব রূপ পাচ্ছে না।
পুলিশি পদক্ষেপ
পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং শিগগিরই ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করেই স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”