চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধীসমাবেশে এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দিয়েছেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান। ঘটনাটি ঘটে গতকাল শনিবার বিকেলে শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তরিকুল আলম, যিনি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক সহকারী কমান্ডার, অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এই সময় তিনি ১৯৭1 সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আন্দোলনকে না মেলানোর আহ্বান জানান। তার এ মন্তব্যে উত্তেজিত হয়ে জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধার দিকে আঙুল উঁচিয়ে তেড়ে আসেন এবং তার বক্তব্য থামিয়ে দেওয়ার জন্য চিৎকার করেন। এর পর একপর্যায়ে তরিকুল আলমের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে থামিয়ে দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলম, যিনি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন, বলেন, ‘আমি কী বলতে চেয়েছিলাম, তা বলতে দেওয়া হলো না। আমার বক্তব্য শেষ করতে দেওয়া হলো না।’ তিনি অবশেষে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান জানান, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলম ৫ আগস্টের আন্দোলনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেওয়ায় আমি প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
তবে, তরিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি করি না। মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবই। তবে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকে অস্বীকার করি না। আমি শোক জানাই তাঁদের প্রতি যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন। আমাকে সে কথা বলতেই দেওয়া হয়নি।’
এ ঘটনার পর সমাবেশে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা, রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান ও জেলা পুলিশ সুপার রেজাউল করিমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
পরে জেলা পুলিশ সুপার রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনা ছিল। হঠাৎ করেই ঘটে গেছে। এর বেশি কিছু বলার নেই।’