ঢাকা, ১২ মে ২০২৫:
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। কমিশন জানিয়েছে, সরকারি গেজেট বা আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পরই তারা যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
রোববার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র পাইনি। পত্রিকা বা টেলিভিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এ বিষয়ে সোমবার একটি বৈঠক হবে, তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এদিকে, গত শনিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকার একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, যার আওতায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন দল আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম—অনলাইন, সাইবার স্পেস এবং মাঠের রাজনীতি—নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ বিষয়ে বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এই লক্ষ্যে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকের সারসংক্ষেপে বলা হয়, বর্তমান সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯–এ কোনো সংগঠন বা সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সুস্পষ্ট বিধান ছিল না। তাই সময়োপযোগী সংশোধনের মাধ্যমে এসব বিধান সংযোজন করা হয়েছে, যাতে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যুক্ত ব্যক্তিদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সত্তার কার্যক্রমও আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা যায়।
নতুন সংশোধনীতে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত সত্তার প্রচার, প্রচারণাও আইনের আওতায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে বলে জানা গেছে।
নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আসার কথা রয়েছে।