ঢাকা, ১২ মে ২০২৫:
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার সাম্প্রতিক বাণিজ্য আলোচনা ইতিবাচক দিকে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে গেছে স্বর্ণে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে মূল্যবাজারে।
সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম প্রতি আউন্সে প্রায় ১.৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩,২৭৭.৩৪ ডলার, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পতন। অন্যদিকে ফিউচার মার্কেটেও স্বর্ণের দাম কমে এসেছে ১.৯ শতাংশ, যেখানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ৩,২৮১.৭০ ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা কমে যাওয়ার পাশাপাশি ডলারের মান বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
রিলায়েন্স সিকিউরিটিজ–এর কমোডিটি বিশেষজ্ঞ জিগার ত্রিবেদী বলেন, “চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনা ইতিবাচক দিকে যাওয়ায় ডলারের মান শক্তিশালী হচ্ছে। সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এর স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতি বজায় থাকলে স্বর্ণের দাম আরও কমে ৩,২০০ ডলারে নেমে আসতে পারে।”
বাণিজ্য আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ১১ মে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে উভয় পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেছে। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, তারা বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে একটি চুক্তির পথে অগ্রসর হচ্ছে। চীনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, আলোচনায় ‘গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য’ অর্জিত হয়েছে।
চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী হি লাইফেং বলেন, আলোচনার ইতিবাচক ফলাফলের ভিত্তিতে সোমবার জেনেভায় একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হবে।
বিনিয়োগকারীদের মনোভাব বদলাচ্ছে
বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা ও বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কায় দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ ছিল নিরাপদ বিনিয়োগের অন্যতম আশ্রয়স্থল। তবে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক অগ্রগতির ফলে সেই ধারা বদলাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে ফিরে যেতে শুরু করেছেন, যার প্রভাব সরাসরি পড়ছে স্বর্ণের বাজারে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির স্থিতিশীলতা ও ডলারের শক্তিমানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগামী সপ্তাহগুলোতে স্বর্ণের বাজারে আরও পরিবর্তন আসতে পারে।