📅 প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২৫ | মঙ্গলবার
✍️ প্রবাস বুলেটিন ডেস্ক রিপোর্ট
ঢাকা:
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা। সোমবার (১২ মে) ট্রাইব্যুনালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট ২০২৪ সালের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
🔹 শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ
প্রধান প্রসিকিউটর জানান, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি অভিযোগ প্রকাশ করা হয়েছে:
-
উসকানি ও প্ররোচনা:
এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা গণআন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্র তৈরি করেন। এর ফলে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। -
সরাসরি হত্যার নির্দেশ:
তদন্তে পাওয়া টেলিফোন আলাপ ও প্রমাণ অনুসারে, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রসিকিউটর জানান, এই নির্দেশনার স্পষ্ট প্রমাণপত্র তদন্ত সংস্থার হাতে রয়েছে।
🔹 অন্যান্য অভিযুক্ত
অভিযোগপত্রে শেখ হাসিনার সঙ্গে অভিযুক্ত করা হয়েছে আরও দুজনকে:
-
আসাদুজ্জামান খান কামাল – তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
-
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন – তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক
তিনজনকেই মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
🔸 পটভূমি ও তদন্তের অগ্রগতি
গত বছরের জুলাই-আগস্টে চলা ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচার গুলি ও হত্যাকাণ্ডে প্রায় দেড় হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। পরে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এরপর গত ১৭ ডিসেম্বর ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দুটি ভিন্ন মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। সর্বশেষ ২০ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে বলা হয়, এবং সেই নির্দেশ অনুযায়ীই এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হলো।
🔹 বিচারক ও শুনানি
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার এর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে। শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
🔸 পরবর্তী পদক্ষেপ
প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানান, মামলার পরবর্তী ধাপ হিসেবে আসামিদের গ্রেপ্তার ও আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। অন্যদিকে তদন্ত সংস্থা এখনও বাকী তিনটি অভিযোগ জনসমক্ষে প্রকাশ করেনি—তবে তা বিচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হবে।
📌 এই ঐতিহাসিক বিচার প্রক্রিয়ার প্রতিটি আপডেট জানতে চোখ রাখুন ‘প্রবাস বুলেটিন’-এ। সঠিক, নির্ভরযোগ্য ও প্রবাসবান্ধব সংবাদ পরিবেশনই আমাদের অঙ্গীকার।