ঢাকা, ১৩ মে:
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) যৌথভাবে রাজধানীর আসাদগেট এলাকায় ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। মঙ্গলবার পরিচালিত এই অভিযানে আনুমানিক ৩০টি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ এবং তিনটি রিকশা ভেঙে দেওয়া হয়।
অভিযান চলাকালীন সময়ে রিকশাচালকদের কান্নার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এই প্রেক্ষিতে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এক ফেসবুক পোস্টে জানান, যাদের রিকশা ভাঙা হয়েছে, তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে এবং আয়ের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসক এজাজ আরও জানান, “মূল সড়কে না আসার জন্য বারবার বলা সত্ত্বেও কিছু চালক নির্দেশনা লঙ্ঘন করায় এই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। তবে সরকার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পরিবারগুলোর পুনর্বাসনে সচেষ্ট থাকবে।”
ডিএমপি ও ডিএনসিসির যৌথ অভিযানে জানানো হয়, ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশাগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলবে এবং ডেসকোর সহায়তায় এসব রিকশার চার্জিং পয়েন্ট ও উৎপাদনের ওয়ার্কশপ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এক গবেষণা প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, “রাজধানীর প্রায় ২০ শতাংশ দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে এসব অননুমোদিত ব্যাটারিচালিত রিকশা। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এসব দুর্ঘটনায় বেশি ঝুঁকিতে থাকে।” তিনি অভিযোগ করেন, এসব রিকশার নির্মাণ ও চলাচলে কোনো নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি, ফলে তা জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।
সরকার ইতোমধ্যে বুয়েটের সহায়তায় নিরাপদ ব্যাটারিচালিত রিকশার ডিজাইন তৈরি করেছে এবং অনুমোদিত কয়েকটি কোম্পানিকে তা উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ডিএনসিসি প্রশাসক আরও জানান, এই মাসের মধ্যেই রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষে উত্তীর্ণরা বৈধ লাইসেন্স পাবেন এবং নির্দিষ্ট এলাকায় নির্ধারিত ভাড়ায় রিকশা চালাতে পারবেন।
নতুন ব্যবস্থায় প্রতিটি রিকশার জন্য একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একটি মাত্র লাইসেন্স ইস্যু করা হবে এবং চলমান রিকশা বাণিজ্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।