ঢাকা, ১৬ মে:
উড্ডয়নের পরপরই কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটের পেছনের চাকা খুলে পড়েছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে ফ্লাইটটি নিরাপদে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে। যাত্রীদের সবাই সুস্থ ও নিরাপদ রয়েছেন।
আজ শুক্রবার (১৬ মে) দুপুর ১টা ২০ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বিজি ৪৩৬ নম্বর ফ্লাইটটি, যা ড্যাশ ৮-৪০০ মডেলের একটি উড়োজাহাজ। ফ্লাইটটিতে শিশুসহ মোট ৭১ জন যাত্রী ছিলেন। উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই পাইলট জরুরি পরিস্থিতির কথা জানিয়ে ঢাকার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে বার্তা পাঠান।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর বলেন, “কক্সবাজার থেকে উড্ডয়নের পর পেছনের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়। এরপরই আমরা জরুরি অবতরণের প্রস্তুতি নিই। বিকেল ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি নিরাপদে ঢাকায় অবতরণ করে।”
চাকা পড়ার বিষয়টি প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারা লক্ষ্য করেন। কক্সবাজার বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, চাকাটি পড়ে যায় নুনিয়া ছড়া এলাকায়, সেখান থেকে পরে এটি উদ্ধার করা হয়।
বিমানবন্দরে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় রানওয়ের পাশে ফায়ার সার্ভিসের দল প্রস্তুত রাখা হয়। একইসঙ্গে বিমানবন্দরের ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট দ্রুত অবস্থান নেয় রানওয়ের আশপাশে। বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটি চিহ্নিত করতে এখন তদন্ত চলছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পেছনের একটি চাকা খুলে গেলেও বিমানের ভারসাম্য ও অবতরণ ব্যবস্থাপনা থাকায় সতর্কতার সঙ্গে অবতরণ সম্ভব। তবে এ ধরনের ঘটনা গুরুতর নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি তৈরি করে, এবং এর পেছনের কারণ চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ঘটনা ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর ঘটে যাওয়া আরেকটি ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যখন সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের সময় একটি ফ্লাইটের চাকা খুলে পড়ে গিয়েছিল। সেবারও চাকা পড়ে যাওয়ার পর পাইলট সতর্কভাবে বিমানটি অবতরণ করাতে সক্ষম হন।
দুইটি ঘটনারই সফল ব্যবস্থাপনায় বিমানের পাইলটদের প্রশংসা করা হলেও, পুনরাবৃত্তি হওয়া এ দুর্ঘটনা দেশীয় বিমান চলাচল নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অতিসত্বর এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ী পক্ষ শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।