স্পোর্টস ডেস্ক | ২০ মে ২০২৫
টি-টোয়েন্টিতে ১৭৯ রানের বেশি তাড়া করে আগে কখনো জয় পায়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত। সেই সীমা ভেঙে এবার তারা জিতল ২০৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করে, তাও বাংলাদেশের মতো টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে। আমিরাতের ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় এই জয় একই সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য এক ভয়াবহ শিক্ষা ও চরম হতাশার উপলক্ষ।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সোমবার (১৯ মে) বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে তোলে ২০৫ রান। এই বিশাল পুঁজি নিয়েও শেষ পর্যন্ত জয় আসেনি; বরং শেষ ওভারের ৫ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ হেরে বসে লিটন দাসের দল। এটি বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবার, যখন তারা ২০০-র বেশি রান করেও পরাজিত হলো।
ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ে ম্যাচ ছিনিয়ে নিল আমিরাত
স্বাগতিকদের জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম, যিনি শুরু থেকেই এলোমেলো বোলিংয়ের সদ্ব্যবহার করে চালান রানবন্যা। বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান ও নাহিদ রানা শুরুতেই নিয়ন্ত্রণ হারালে আর পেছনে তাকাতে হয়নি আমিরাতকে।
প্রথম ৭ ওভারের প্রতিটিতেই বাউন্ডারি আসে, প্রথম ১০ ওভারেই রান দাঁড়ায় ১০৭। পানি বিরতির পর বাংলাদেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও, শেষ দিকে শরিফুল ইসলামের একটি ওভারে ৫ বলে ১৭ রান দিয়ে জয় হাতছাড়া হওয়ার ভিত্তি গড়ে ওঠে। আর শেষ ওভারে তানজিম হাসান মাত্র ৫ বলেই বাকি ১২ রান দিয়ে দেন ম্যাচটি আমিরাতের হাতে।
লিটনের দৃষ্টিতে শিশির-ফিল্ডিংই মূল দায়ী
পরাজয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অধিনায়ক লিটন কুমার দাস বলেন, “এই পরাজয় আমাদের জন্য অত্যন্ত হতাশাজনক। আমরা ব্যাটিং ভালো করলেও বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে স্পষ্ট ভুল করেছি। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো ছিল, তবে শিশিরের কারণে তাদের সুবিধা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “শারজাহর মতো ছোট মাঠে শিশিরের প্রভাব বড় হয়ে ওঠে। তাই বোলিংয়ের সময় আরও বিচক্ষণ হতে হবে। প্রতিটি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে আলাদা পরিকল্পনা না থাকলে এমন পরিণতি আসবে।”
প্রথম ম্যাচের শিক্ষা কাজে লাগেনি
সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ী দলের অধিনায়ক লিটন দাস বলেছিলেন, এই মাঠে কার্যকর বোলিং করতে শিখতে হবে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেই সেই শিক্ষার ঘাটতি আবারও ধরা পড়ে। বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ের ভুল ও দৃষ্টিকটুভাবে অতিরিক্ত রান বিলিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন:
এই পরাজয় শুধুমাত্র একটি ম্যাচ হার নয়, বরং পরিকল্পনার ঘাটতি, আত্মবিশ্বাসের সংকট ও টিম ম্যানেজমেন্টের ভুল বোঝাবুঝির প্রতিচ্ছবি। ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশ দলের সামনে শিক্ষা নেওয়ার বিশাল সুযোগ তৈরি হলো এই পরাজয়ের মাধ্যমে।