ঢাকা, ২১ মে ২০২৫ — নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির দাবি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন করতে হবে এবং দেশে সুষ্ঠু স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। এসব দাবিতে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় ইসির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে এনসিপি।
আজ মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন। এ সময় তিনি দলের পক্ষে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
বক্তব্যে এনসিপি দাবি করে, ২০২০ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অনিয়ম ও ইসির পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকাই বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দায়ী। দলটির ভাষ্য, “ইশরাক হোসেন বনাম শেখ ফজলে নূর তাপস গং” মামলায় নির্বাচন কমিশন বিবাদী হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে পক্ষ হিসেবে উপস্থাপন না করে একতরফাভাবে রায় দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। এছাড়া রায়ের পর উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাওয়া থেকে বিরত থেকেও কমিশন একপক্ষীয় অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ এনসিপির।
আখতার হোসেন আরও বলেন, “বর্তমান নির্বাচন কমিশন অবৈধভাবে গঠিত হয়েছে। এটি একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রণীত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’-এর মাধ্যমে গঠিত, যা অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রত্যাখ্যান করেছিল।”
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকার কারণে নাগরিক সেবায় স্থবিরতা তৈরি হয়েছে এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দিয়েছে। “এই সংকট নিরসনে নির্বাচন জরুরি হলেও বর্তমান কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা নেই,” বলেন আখতার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব এবং সদস্যসচিব তাসনিম জারা।
এনসিপি মনে করে, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও সংস্কারকেন্দ্রিক একটি কমিশন গঠনের মাধ্যমেই কেবল দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব। দলটি আগামীকালকের কর্মসূচির মাধ্যমে সেই বার্তাই তুলে ধরতে চায়।