ঢাকা, ২৪ মে:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে বাধাগ্রস্ত করে আবার ‘এক-এগারো’ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, “দিল্লি থেকে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির ছক আঁকা হচ্ছে।”
শুক্রবার রাতে নিজের ফেইসবুক পোস্টে এমন মন্তব্য করেন এনসিপি নেতা। চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম, সেনাপ্রধানের বিভিন্ন বিষয়ে স্পষ্ট মতবিরোধ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার পটভূমিতে তার এই বক্তব্য এসেছে।
নাহিদ লেখেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিকে সকল প্রকার আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে স্বাধীন ও সার্বভৌমভাবে পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য। বারবার দেশকে বিভক্ত করে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করা হয়েছে। এখন আবারও একই ষড়যন্ত্রের পুনরাবৃত্তি চলছে।”
তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রেক্ষাপটে আবারও দেশের ভেতরে বিশৃঙ্খলা তৈরির পরিকল্পনা চলছে, যার উৎস ‘বিদেশে, বিশেষত দিল্লিতে’।
এক-এগারো প্রসঙ্গ
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির সেই আলোচিত ঘটনা, যা ‘এক-এগারো’ নামে পরিচিত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। তৎকালীন সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন-সংক্রান্ত সংকটের প্রেক্ষাপটে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াসহ অনেক রাজনীতিক এবং ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার হন। সেই সময়কালের স্মৃতি টেনে এনে নাহিদ ইসলাম সতর্ক করেছেন, “একই রকমের একটি পরিকল্পনা ফের বাস্তবায়নের চেষ্টা হচ্ছে।”
“ঐক্যবদ্ধ হতে হবে”
নাহিদ ইসলাম দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ছাত্র-জনতা ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। সংস্কার, সার্বভৌমত্ব এবং ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর পক্ষে দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
জুলাই আন্দোলনের রূপরেখা
এনসিপি নেতার দাবি অনুযায়ী, ‘জুলাই আন্দোলনের’ মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পথরেখা নির্ধারিত হবে। তিনি বলেন, “ড. ইউনূসকে সংস্কার, বিচার এবং ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারের ‘জুলাই সনদ’ রচিত হবে এবং নির্বাচনের আগে ‘জুলাই গণহত্যা’র বিচার দৃশ্যমান করতে হবে।”
এছাড়া নতুন সংবিধান রচনার জন্য গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচনের দাবি জানান নাহিদ।
ফেইসবুক পোস্টে উত্থাপিত এসব বক্তব্য এনসিপির অফিসিয়াল পেইজেও প্রকাশ করা হয়েছে।