ঢাকা, শনিবার | প্রবাস বুলেটিন ডেস্ক
চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। আজ শনিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে শুরু হওয়া এই অনির্ধারিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। উপস্থিত রয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদের ১৯ জন সদস্য। সম্মেলনকক্ষের বাইরে দেখা গেছে পতাকাবাহী ১৯টি গাড়ি।
এর আগে সকাল ১১টায় একনেক (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) সভা শুরু হয়, যেখানে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সভা শেষ হওয়ার পরই শুরু হয় উপদেষ্টা পরিষদের এই বিশেষ বৈঠক। জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদের বাইরে এই বৈঠকে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। একনেক সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনা সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের কক্ষ ত্যাগ করতে দেখা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠার প্রেক্ষাপটে এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
পদত্যাগ ভাবনায় প্রধান উপদেষ্টা
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠকে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অনির্ধারিত আলোচনায় তাঁর পদত্যাগের ভাবনার কথা প্রকাশ করেন। তিনি চলমান সংকট, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের অভাব, আন্দোলনের কারণে প্রশাসনিক জটিলতা, এবং রাষ্ট্রীয় কাজে বিভিন্ন পক্ষের অসহযোগিতার বিষয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূসের পদত্যাগের ইঙ্গিত সামনে আসার পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন শুরু হয়। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সূত্রমতে, কোনো দলই তাঁর পদত্যাগ চায় না; বরং তারা সরকারের কাছ থেকে একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনের সময়সূচি দাবি করছে।
আজ বিকেলে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক
এদিকে, আজ বিকেলে অধ্যাপক ইউনূস বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। বৈঠকে নির্বাচনকালীন ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং চলমান সংকট নিরসনের পথ খোঁজা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে গত বুধবার সেনাবাহিনীর ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং একটি নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে বক্তব্য দেন। বিষয়টি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দেশজুড়ে সৃষ্টি হওয়া রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক এবং আসন্ন রাজনৈতিক সংলাপ একটি নির্ধারক মোড় আনতে পারে বলেই ধারণা।