চট্টগ্রাম, ২৫ মে ২০২৫:
অন্তর্বর্তী সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগের বিএনপির দাবির প্রেক্ষিতে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি দাবি করেছে, উক্ত দুই উপদেষ্টা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন, বরং গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবেই অন্তর্বর্তী সরকারের অংশ।
রোববার সকালে চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেট এলাকার বিপ্লব উদ্যানে আয়োজিত এক পথসভা কর্মসূচি শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
‘তাঁদের সম্মানহানি যেন না হয়’ — এনসিপির বার্তা
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত বলেন,
“যে দুজন উপদেষ্টার কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা কোনো দলীয় কোটা থেকে নয়, বরং গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্ব করেই সরকারে আছেন। তাঁদের এনসিপির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে দলীয় ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। আমরা এর নিন্দা জানিয়েছি।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে স্পষ্ট করে বলেছি, এই দুই উপদেষ্টার সম্মান যাতে অক্ষুণ্ন থাকে এবং তাঁদের ভূমিকা যেন ভুলভাবে ব্যাখ্যা না করা হয়।”
পলিসি ও ঐক্যের মাঝে সমতা আনার আহ্বান
রাজনৈতিক মতপার্থক্য প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,
“পলিসির জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভিন্নতা থাকতেই পারে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংকটকালে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই — এটিই বাংলাদেশের জাতীয় চরিত্র। অতীতেও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের সময় আমরা একসঙ্গে দাঁড়িয়েছি, এখনো তা অব্যাহত রয়েছে।”
বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপ—পথসভার মূল বার্তা
এনসিপির এই পথসভা কর্মসূচি সম্পর্কে হাসনাত বলেন,
“বিচার, সংস্কার ও আগামী নির্বাচন নিয়ে আমরা জনগণকে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাচ্ছি। পাশাপাশি জনগণ কী ভাবছে, তাও জানার চেষ্টা করছি।”
তিনি জানান,
“সংবিধান সংস্কার, গণপরিষদ ও আইনসভা নির্বাচন, শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন ইত্যাদি বিষয় গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখন প্রয়োজন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার, সংস্কার এবং জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা।”
চট্টগ্রাম দক্ষিণে এনসিপির দিনব্যাপী পথসভা
আজ দিনব্যাপী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, দোহাজারী, চন্দনাইশ, পটিয়া ও বোয়ালখালী উপজেলায় এনসিপি পথসভা করবে।
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত আছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব মীর আরশাদুল হকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বিশ্লেষণ:
এই বক্তব্য ও কর্মসূচির মাধ্যমে এনসিপি তাদের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে— তারা অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষা এবং গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধিদের সম্মান বজায় রাখাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। একইসাথে বিচার ও নির্বাচনী রোডম্যাপ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি চাপ বজায় রাখছে।