স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা | ২৭ মে ২০২৫
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণের বিষয়টি এখন ‘আদালতের বিচারাধীন’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। ফলে আপাতত তার শপথ অনুষ্ঠান স্থগিত রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের শপথ পাঠের বিষয়ে বর্তমানে আপিল বিভাগের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এর আগে ২২ মে হাই কোর্টে দায়ের করা রিট আবেদন খারিজ হলে মন্ত্রণালয় শপথের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু ২৫ মে ইশরাক হোসেন নিজেই হাই কোর্টে রিট করেন এবং ২৬ মে ওই রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে একজন নাগরিক লিভ টু আপিল দাখিল করেন। এর ফলে বিষয়টি এখন সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন।
মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য ও আইনি অবস্থান
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বিডিনিউজকে বলেন, “বিষয়টি এখন আদালতে আছে। আমরা আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি।”
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী জহিরুল ইসলাম মূসা সোমবার চেম্বার আদালতে আবেদন দাখিল করেছেন। অন্যদিকে, ইশরাক হোসেনের পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহাবুব উদ্দীন খোকন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে শপথের ‘তাগিদ নোটিশ’ পাঠিয়েছেন।
রাজনৈতিক পটভূমি ও গেজেট প্রকাশ
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেন। তবে চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ওই ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে।
পরবর্তীতে ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন থেকে প্রকাশিত গেজেটে তাকে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই শপথ গ্রহণের দাবি জোরালোভাবে উঠে আসে ইশরাকপন্থীদের পক্ষ থেকে। ১৪ মে তাকে শপথ না পড়াতে হাই কোর্টে রিট করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনি জটিলতার কথা বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় শপথ অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকে।
রাজপথে চাপ, প্রতিবাদ ও রাজনৈতিক উত্তেজনা
ইশরাকের সমর্থকরা নগর ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে তার শপথের দাবি জানায়। একইসঙ্গে তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়ার পদত্যাগের দাবিও তোলে। অপরদিকে, অভ্যুত্থান-পশ্চাদপটে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টি (এনসিপি)’ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ সমাবেশ করে এবং অবিলম্বে ইসি পুনর্গঠনের দাবি জানায়।
শেষ কথা
রিট খারিজের পরও শপথ না হওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক ও আইনি ধোঁয়াশা। তবে সরকার বলছে, যেহেতু লিভ টু আপিল দাখিল হয়েছে, তাই আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা কোনো পদক্ষেপ নেবে না।