স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা | ২৭ মে ২০২৫
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষস্থানীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পেয়েছেন। দেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে খালাস পেলেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই বহুল আলোচিত রায় ঘোষণা করেন।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এই রায়ের ফলে জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
আদালতে আসামিপক্ষের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন এবং অ্যাডভোকেট রায়হান উদ্দিন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, যার মধ্যে ছিলেন দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলালসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। অভিযোগ ছিল, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুরে গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধে তার সম্পৃক্ততা ছিল।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলেও, পরবর্তীতে রিভিউ আবেদনের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ শুনানি শেষে আজকের রায়ে তাকে খালাস দেওয়া হয়।
২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আজহারুল ইসলামের পক্ষে আপিল করা হয়, যেখানে ১১৩টি যুক্তির ভিত্তিতে তার নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করা হয়। মূল আপিল ছিল ৯০ পৃষ্ঠার, যার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল ২৩৪০ পৃষ্ঠার বিশদ আপিল ডকুমেন্ট।
এ রায়ের পর রাজনৈতিক ও আইন অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। একদিকে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এটিকে ন্যায়বিচারের বিজয় হিসেবে দেখছেন, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।