স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা | ২৭ মে ২০২৫
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা। অন্যদিকে, একই দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে ‘ফ্যাসিবাদ উৎখাত যাত্রা’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ‘জুলাই মঞ্চ’। এ অবস্থায় সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আজ সব ধরনের দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সচিবালয়ের নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়।
বিতর্কিত অধ্যাদেশ এবং কর্মচারীদের প্রতিক্রিয়া
সরকার সোমবার রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে। নতুন এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত কোনো কর্মচারীকে বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। শুরু থেকেই কর্মচারী সংগঠনগুলো এই ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। তাদের আপত্তি উপেক্ষা করেই অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হয়, যা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কর্মক্ষেত্রে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
সচিবালয়ে বিক্ষোভ ও ফটক অবরোধ
সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের পাশে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা। পরে মিছিল নিয়ে তাঁরা মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবের দপ্তর ঘেরাও করতে যান এবং সেখানেই বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থানের ঘোষণা দেন। এরপর সচিবালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ করে কর্মসূচি চালান তারা। আধা ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সচিবালয়ের ফটক পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
‘ঐক্য ফোরাম’-এর আত্মপ্রকাশ ও কর্মসূচি ঘোষণা
পরে সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সংগঠনকে নিয়ে ‘ঐক্য ফোরাম’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়। এই ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবীর ঘোষণা দেন, “কালো অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে এটি সারা দেশের ১৮ লাখ সরকারি কর্মচারীর মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে বাদামতলায় সমবেত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ফোরামের আরেক কো-চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম জানান, “দেশব্যাপী কর্মচারীরা এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। এটি একটি সম্মিলিত প্রতিরোধ।”
আন্দোলনকারীদের হুমকি ও উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক না হওয়া
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় বিভিন্ন সচিব অনেক কর্মচারীকে ডেকে নিয়ে হুমকি দিয়েছেন। তারা বলেন, “এই ধরনের আচরণ গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপের শামিল।”
এদিকে আন্দোলনকারীদের আইন উপদেষ্টা হিসেবে অধ্যাপক আসিফ নজরুলের সঙ্গে সোমবার বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও রাষ্ট্রীয় ব্যস্ততার কারণে তা সম্ভব হয়নি।