প্রতিবেদন: তুষার হোসেন | প্রবাস বুলেটিন
সিলেটের জাফলংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে দেওয়ার ঘটনায় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় যুবদল।
আজ রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি মোমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “উপদেষ্টাদের গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় জাহিদকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”
যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলসহ জাহিদ খানকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বহিষ্কৃত নেতার কোনো ধরনের কর্মকাণ্ডের দায়ভার যুবদল নেবে না এবং তার সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তটি অনুমোদন করেছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন।
পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিক্ষোভ
শনিবার সকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জাফলং এলাকা পরিদর্শন করেন। ফেরার পথে গোয়াইনঘাটের বল্লাঘাট এলাকায় স্থানীয় বালু-পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের একদল তাদের গাড়িবহর আটকে দেন। পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে তারা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের স্থানীয় নেতারা। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজিজ উদ্দিন, সহসভাপতি সুমন শিকদার, জেলা ছাত্রদলের সহসাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল জলিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রমজান মোল্লা এবং বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ খান।
সাংগঠনিক ব্যবস্থার প্রক্রিয়া
বিএনপির একাধিক সংগঠনের সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টাদের সরকারি কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, স্থানীয় কয়েকজন ছাত্রদল নেতা বিক্ষোভে জড়িত ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে এবং আজ রোববার তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যাঁরা সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করেছেন, তাঁদের শনাক্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।”
প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, সিলেট অঞ্চলের জাফলংসহ বিভিন্ন পাথর কোয়ারি বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের উপদেষ্টা পর্যায়ে সরেজমিন পরিদর্শনের সময় এই বিক্ষোভ ঘটে। ঘটনাটি স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।