স্টাফ রিপোর্টার | ঢাকা |
বহুজাতিক তামাক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড (বিএটি বাংলাদেশ) তাদের নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয় মহাখালীর নিউ ডিওএইচএস এলাকা থেকে আশুলিয়ার দেহোরা, ধামসোনা এলাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে নতুন অফিস কার্যক্রম শুরু করবে কোম্পানিটি। একই দিনে মহাখালীর কারখানার কার্যক্রম স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
দীর্ঘদিনের আইনি জটিলতার অবসান
মহাখালী ডিওএইচএসের এই কারখানা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো কারখানা স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিল।
জানা গেছে, বিএটি বাংলাদেশ ইজারা চুক্তির ভিত্তিতে কারখানার জমিতে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। প্রতি দফার ইজারা মেয়াদ ছিল ৩০ বছর করে, যার সর্বোচ্চ মেয়াদ ছিল ৯০ বছর। ৬০ বছর পার হওয়ার পর বাকি ৩০ বছরের জন্য ইজারা নবায়নের আবেদন করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা বাতিল করে।
এরপর কোম্পানিটি আইনি লড়াইয়ে যায়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত ২৮ মে বিএটি বাংলাদেশের করা আপিল খারিজ করে দিলে কোম্পানিকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
নতুন ঠিকানা
বিএটি বাংলাদেশের নতুন নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা হবে:
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, দেহোরা, ধামসোনা, বলিভদ্র বাজার, আশুলিয়া, ঢাকা-১৩৪৯।
লভ্যাংশ এবং শেয়ারের অবস্থান
আজ (বৃহস্পতিবার) প্রতিবেদন তৈরির সময় ডিএসইতে বিএটি বাংলাদেশের শেয়ারের দাম ছিল ২৮৪.৯০ টাকা। কোম্পানিটি ধারাবাহিকভাবে শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিয়ে আসছে—
-
২০২৪ সালে: ৩০০%
-
২০২৩ সালে: ১০০%
-
২০২২ সালে: ২০০%
-
২০২১ সালে: ২৭৫%
কোম্পানির পটভূমি
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে প্রথম কারখানা স্থাপন করে কোম্পানিটি। এরপর ১৯৬৫ সালে ঢাকার মহাখালীতে প্রতিষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় কারখানা, যা একসময় কোম্পানির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিএটি বাংলাদেশের ব্যবসা কৌশল, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং পরিবেশগত দায়বদ্ধতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আবাসিক এলাকায় শিল্প কার্যক্রমের সীমাবদ্ধতা, আইনি প্রতিবন্ধকতা এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই কার্যক্রমের প্রয়োজনে এই স্থানান্তর সময়োপযোগী ও যৌক্তিক।
সম্পাদনা ডেস্ক
তথ্যসূত্র: ডিএসই, সুপ্রিম কোর্ট রায়, বিএটি বাংলাদেশ কোম্পানির প্রকাশিত বিবৃতি।