গৌরবোজ্জ্বল অভ্যুত্থানের স্মরণে প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য মাসব্যাপী কর্মসূচির সূচনা
প্রবাস বুলেটিন ডেস্ক | ১ জুলাই ২০২৫, ঢাকা
গৌরবোজ্জ্বল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে প্রতি বছর ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার (১ জুলাই) মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে তিন শিক্ষার্থীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বৃত্তির চেক তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
এদিন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বৃত্তি গ্রহণ করেন—
-
হাবীবা আক্তার, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ
-
এস এম আবু তালেব, তেজগাঁও সরকারি কলেজ
-
খন্দকার মাহমুদুল হাসান, ঢাকা কমার্স কলেজ
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেই এই বৃত্তি চালু করা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ পাবেন। চলতি বছরই ৭২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২,০৪০ জন শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পাচ্ছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানউল্লাহ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. মো. লুৎফর রহমান ও ট্রেজারার ড. এ টি এম জাফরুল আযম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তরুণদের অভ্যুত্থান, নতুন রাষ্ট্রচিন্তার সূচনা
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা সিআর আবরার। তিনি বলেন, “এক বছর আগে বাংলাদেশের তরুণরা ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায় রচনা করেছে। সেই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একজনের শাসিত জাতি থেকে অধিকারভোগী নাগরিক জাতিতে রূপান্তরিত হয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রকে জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক, সংবেদনশীল ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের দায়িত্ব বর্তমান সরকারের ওপর অর্পিত হয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে আর কখনও স্বৈরতন্ত্র মাথাচাড়া দিতে না পারে।”
সিআর আবরার অভিযোগ করে বলেন, “গত এক দশকে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা সরকার নাগরিক অধিকার হরণ করেছে, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার সংস্কৃতি চালু করেছে। নির্বাচনের নামে প্রহসন চালিয়েছে, এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়েছে। আমরা সেই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার কঠিন কাজ শুরু করেছি।”
শিক্ষার ভূমিকাই অগ্রাধিকার
তিনি বলেন, “নতুন বাংলাদেশ গড়ার ভিত্তি হচ্ছে শিক্ষা। সমাজে ন্যায় ও সমতার জন্য শিক্ষার কোনও বিকল্প নেই। সীমিত সময়ের মধ্যেও সরকার গুণগত শিক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।”
সিআর আবরার বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান শুধু একটি নতুন রাষ্ট্র দেয়নি, নতুন স্বপ্নও দেখিয়েছে। আমাদের তরুণরা যাতে শুধু দেশের নয়, বিশ্বমঞ্চেও নেতৃত্ব দিতে পারে— সেই প্রস্তুতি শিক্ষার মাধ্যমেই গড়ে তুলতে হবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২ জন শিক্ষার্থী শহীদ হন। সেই আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিতেই এই বৃত্তি কর্মসূচির সূচনা।