নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রবাস বুলেটিন | চট্টগ্রাম, ২ জুলাই ২০২৫:
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে সকাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে, সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় পটিয়া থানা ঘেরাওয়ের মধ্য দিয়ে আন্দোলনের শুরু হয়। পরে সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পটিয়া থানার সামনে এবং এরপর পটিয়া বাইপাস এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। ‘চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে শতাধিক ছাত্র–জনতা অংশ নেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন এবং পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূর ও উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদূর রহমানের অপসারণের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার ‘দমনমূলক আচরণ ও পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা’র বিরুদ্ধে তাঁদের এই কর্মসূচি।
মহাসড়ক অবরোধের কারণে পটিয়া বাইপাস মোড় থেকে ইন্দ্রপুল কাজীরপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। অনেক যাত্রীকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। বাসচালক মো. আবুল কালাম বলেন, “দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছি। বাসে প্রায় ৪০ জন যাত্রী রয়েছে। কখন ছাড়তে পারব, তা নিশ্চিত নই।”
তবে আন্দোলনকারীরা অ্যাম্বুলেন্স ও পরীক্ষার্থীদের জন্য পথ উন্মুক্ত রাখেন।
পটিয়ায় সংঘর্ষের পটভূমি
গতকাল মঙ্গলবার রাতে পটিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের দুই দফা সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৯ জন আহত হন বলে দাবি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীদের মতে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেন আন্দোলনকারীরা। তাঁকে থানায় নিয়ে এলে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে অস্বীকৃতি জানায়, কারণ তাঁর নামে কোনো মামলা ছিল না। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা ও পরে সংঘর্ষ ঘটে।
সন্দেহভাজন ওই ছাত্রলীগ নেতাকে শেষ পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে পুলিশের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।
আন্দোলনকারীদের দাবি
আন্দোলনকারীরা বলেন, পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণ, ছাত্রলীগ নেতাদের দায়মুক্তি এবং নিরীহ আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-পীড়নের প্রতিবাদেই তাঁরা এই অবরোধ করেছেন। তাঁদের দাবি, পুলিশের নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে ওসি ও এসআইকে দ্রুত বদলি করতে হবে।