কক্সবাজার, ৮ জুলাই ২০২৫:
কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুই শিক্ষার্থী। নিহত শিক্ষার্থীর নাম কে এম শাদনান সাবাব রহমান (২১)। তিনি ঢাকার মিরপুর এলাকার বাসিন্দা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থী হলেন বগুড়া জেলার রফিকুল ইসলামের ছেলে আসিফ আহমেদ (২২) এবং আমিনুল ইসলামের ছেলে অরিত্র (২২)। তারাও একই বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
ভ্রমণ আনন্দের পরিণতি ট্র্যাজেডিতে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ মিয়া জানান, প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শেষে পাঁচ বন্ধু মিলে সোমবার কক্সবাজার ভ্রমণে যান। আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তারা হিমছড়ি জাদুঘর সংলগ্ন সমুদ্র সৈকতে ছবি তুলতে যান। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে রিয়াদ ও আরেক বন্ধু ছাতার নিচে আশ্রয় নিলেও তিনজন বন্ধু পানিতে থেকে যান।
“আমরা বারবার ডেকেও তাদের তোলাতে পারিনি,” বলেন রিয়াদ। “তারা শুধু বলছিল ‘আসছি, আসছি’। এমনকি মাঝিরাও তাদের ফিরে আসতে বলেছিল। কিন্তু একপর্যায়ে তারা পানির স্রোতে তলিয়ে যায়।”
উদ্ধার তৎপরতা চলছে
হিমছড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) সুমনাথ বসু জানান, স্রোতের টানে তিন বন্ধু ভেসে যান। এদের মধ্যে কে এম শাদনানের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকি দুইজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি বলেন, “ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস এবং সি সেইফ লাইফ গার্ড সদস্যরা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ চলছে।”
দুর্ঘটনা নিয়ে সতর্কতা জরুরি
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হিমছড়ি সৈকতের ওই অংশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না, এবং পর্যাপ্ত ওয়ার্নিং সাইনও চোখে পড়েনি। নিয়মিত সতর্কতা উপেক্ষা করে পর্যটকরা সমুদ্রে নেমে পড়ায় এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
উদ্ধার ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ
প্রশাসন জানিয়েছে, নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।