ঢাকা, ৭ জুলাই ২০২৫:
জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন জানিয়েছেন তাঁদের পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমির হোসেন।
সোমবার (৭ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে আগামী ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন হবে কিনা সে বিষয়ে আদেশ দেওয়ার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
‘এটি মানবতাবিরোধী অপরাধ নয়’
শুনানিতে শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী আমির হোসেন যুক্তি দেন, “জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড কোনো যুদ্ধপরিস্থিতিতে সংঘটিত হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধ বিচারের জন্য। তাই এ আইনে এই মামলার বিচারযোগ্যতা নেই।”
তিনি বলেন, “আবু সাঈদ হত্যার সময় শেখ হাসিনা দেশে ছিলেন না। তিনি পরে দেশে এসে নিহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। শেখ হাসিনা হত্যাকাণ্ডে বাকরুদ্ধ হয়েছিলেন।”
‘সুপিরিয়র কমান্ডার ছিলেন না’
আইনজীবী আরও বলেন, “শেখ হাসিনা বা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কেউই সরাসরি কমান্ডার হিসেবে গণহত্যার নির্দেশ দেননি। বরং তাঁরা দেশের উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও অনেক জায়গায় নিহত হয়েছে।”
রাজাকারের বক্তব্য ও কল-অডিও প্রসঙ্গে
আসামিপক্ষের দাবি, শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের বাচ্চা’ মন্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে অডিও কথোপকথন সম্পর্কেও তারা বলেন, “এই সংক্রান্ত নির্ভরযোগ্য ও বৈধ কোনো ডকুমেন্ট প্রসিকিউশন পেশ করতে পারেনি।”
প্রসিকিউশনের অবস্থান
অন্যদিকে, গত কয়েকটি শুনানিতে প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচটি নির্দিষ্ট অভিযোগ আদালতে উপস্থাপন করেছেন। তাঁরা মামলার পূর্ণাঙ্গ বিচার শুরুর পক্ষে আদালতের কাছে প্রস্তাব করেছেন।
আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপ
আদালত উভয়পক্ষের যুক্তি শোনার পর আদেশের জন্য ১০ জুলাই দিন নির্ধারণ করেছেন। ওই দিন সিদ্ধান্ত হবে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো গঠন হবে কি না।