জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে বিএনপির সম্মাননা অনুষ্ঠান
সিলেট, ৮ জুলাই ২০২৫:
“নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ তত পিছিয়ে যাবে” — এমন মন্তব্য করে দ্রুত একটি অংশগ্রহণমূলক, অর্থবহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার বিকালে সিলেট নগরীর দরগাহ গেইট এলাকায় স্টার প্যাসিফিক হোটেলে আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও তাদের পরিবারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এই বক্তব্য দেন।
‘নির্বাচন দেরি মানেই অনিশ্চয়তা’
মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন দেরি হলে বিনিয়োগ থেমে যাবে, নারী-শিশুর নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে, বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে যাবে। অতএব, এখনই প্রয়োজন জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকার।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচিত সরকারের চেয়ে শক্তিশালী কোনো সরকার হতে পারে না। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া রাষ্ট্র চালানো মানেই অনিয়মের ধারাবাহিকতা। এ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ—সুষ্ঠু নির্বাচন।”
‘গণতন্ত্র ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে নতুন লড়াই’
সরকারের সমালোচনায় ফখরুল বলেন, “আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই, যেখানে জনগণ মতপ্রকাশে স্বাধীন থাকবে, নারীরা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে, তরুণরা পাবে কর্মসংস্থান, আর জনগণ পাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা। এই লক্ষ্যেই তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা নতুন করে আন্দোলনে নেমেছি।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “১৫ বছরে এই ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্ঠী প্রায় ২০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। শুধু জুলাই-আগস্টের ৩৬ দিনে শহীদ হয়েছেন দুই হাজার মানুষ। শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের রাজনৈতিক ও নৈতিক দায়িত্ব।”
খালেদা জিয়ার ‘প্রেরণা’ এবং তারেক রহমানের নেতৃত্ব
ফখরুল জানান, “আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এখনও অসুস্থ অবস্থায় থেকেও আমাদের প্রেরণা ও দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। এখন আর কথার রাজনীতি নয়, সময় কাজের। ত্যাগ, সাহস ও রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।”
তিনি বলেন, “তারেক রহমানের নেতৃত্বেই একটি নতুন, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে সবার জন্য থাকবে সমান সুযোগ ও ন্যায়বিচার।”
শহীদ পরিবার পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি
গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন, সন্তানদের শিক্ষা ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি জানান, “বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শহীদদের স্বীকৃতি ও পরিবারগুলোর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা হবে।”
উপস্থিত ছিলেন দলের শীর্ষ নেতারা
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
উপস্থিত ছিলেন—
-
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন
-
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, এম এ মালিক ও ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন
-
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউস, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী প্রমুখ।