ফেসবুকে অন্যের তৈরি ভিডিও, ছবি বা লেখার হুবহু কপি করে নিজের নামে বারবার পোস্ট করা ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে মেটা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই ধরনের ব্যবহারকারীদের ফেসবুক মনিটাইজেশন প্রোগ্রাম থেকে সাময়িকভাবে বাদ দেওয়া হবে এবং তাদের কনটেন্টের বিস্তার (Reach) উল্লেখযোগ্যভাবে সীমিত করা হবে।
এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য হলো—মূল নির্মাতাদের সুরক্ষা দেওয়া এবং ফেসবুকে একঘেয়ে স্প্যাম কনটেন্টের হার কমানো।
নকল কনটেন্ট মানেই শাস্তি
মেটা এক বিবৃতিতে বলেছে, “ফেসবুকে একই ভিডিও বা মিম বারবার দেখা যায়, অনেক সময় মূল নির্মাতার নাম না দিয়েই। এতে দর্শকের অভিজ্ঞতা নষ্ট হয় এবং নতুন নির্মাতারা কনটেন্টের বাজারে টিকে থাকতে হিমশিম খায়।”
ফেসবুকের অ্যালগরিদম যখন বুঝতে পারে কোনো কনটেন্ট হুবহু কপি করা হয়েছে, তখন সেই নকল কনটেন্টের রিচ কমিয়ে দেওয়া হয়। এবার এর সঙ্গে মনিটাইজেশন বন্ধের মতো বড় পদক্ষেপও যুক্ত হচ্ছে।
নির্মাতাদের জন্য নতুন সুবিধা
মূল নির্মাতাদের অধিকার রক্ষায় মেটা একটি পরীক্ষামূলক ফিচার চালু করছে, যেখানে কপি করা কনটেন্টের সঙ্গে মূল ভিডিও বা পোস্টের লিংক যুক্ত থাকবে। দর্শক চাইলে সরাসরি মূল নির্মাতার কনটেন্ট দেখতে পারবেন, ফলে প্রকৃত মালিক কনটেন্ট থেকে লাভবান হবেন।
ব্যতিক্রম থাকছে ‘রিমিক্সড’ কনটেন্টে
তবে যারা অন্যের কনটেন্টকে নিজের মতো সম্পাদনা করেন, ভয়েসওভার দেন বা নিজস্ব ব্যাখ্যা যুক্ত করেন—তাঁদের জন্য এই কঠোর ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না।
মেটা বলেছে, “ব্যবহারকারীদের উচিত কনটেন্টে অর্থবহ সংযোজন করা। কেবল কপি করে পোস্ট করা কখনোই নির্মাতা হিসেবে বিবেচিত হবে না।”
বাংলাদেশে প্রভাব
বাংলাদেশে অনেক নির্মাতা ফেসবুক রিলস বা ভিডিও কনটেন্ট বানিয়ে উপযুক্ত কনটেন্টের মাধ্যমে আয় করছেন। তবে কিছু স্প্যাম অ্যাকাউন্ট কেবল বিদেশি ভিডিও কেটে বা জনপ্রিয় মিম কপি করে প্রচার করে দর্শক ও অর্থ উভয়ই হাতিয়ে নিচ্ছে। মেটার নতুন সিদ্ধান্তে এই ধরনের অপব্যবহার বন্ধ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষণ:
এই পদক্ষেপ ফেসবুকে সৃজনশীলতা ও মৌলিক কনটেন্ট তৈরিতে উৎসাহ জোগাবে। একইসঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে নির্ভরযোগ্য কনটেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
সূত্র: মেটার অফিসিয়াল ঘোষণাপত্র, দ্য ভার্জ
ছবি: ফেসবুক ডেভেলপার ব্লগ