স্টাফ রিপোর্টার
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশগ্রহণ করা সিপিবি, বাসদ ও বাংলাদেশ জাসদ রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে হতাহতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার বিরোধিতা করে ১০ মিনিটের প্রতীকী ওয়াকআউট করেছেন।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল ১১টার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৮তম দিন অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি।
আলোচনার শুরুতেই সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “মাইলস্টোন স্কুলে যে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা সবাই শোকাহত। কিন্তু সেই দুর্ঘটনার পরপরই যখন শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা স্বজন হারানোর শোক ও নিরাপত্তাহীনতার প্রতিবাদ জানাতে আসেন, তখন তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এটা শুধু অমানবিকই নয়, বরং একটা স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি।”
তিনি আরও বলেন, “স্বৈরাচারী শাসকদের আমলে আমরা এমন দৃশ্য দেখেছি। এখন আবার একই ধরনের আচরণ প্রত্যক্ষ করছি। অথচ, এই সরকারের উপদেষ্টারা এখনকার পরিস্থিতিকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন এবং ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আহ্বান জানাচ্ছেন। এটা হাস্যকর। আমরা মনে করি, প্রতিবাদ জানানো এখন সময়ের দাবি।”
বক্তব্য শেষে রুহিন হোসেন প্রিন্স ঘোষণা দেন যে, তারা ১০ মিনিটের জন্য সংলাপ থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন প্রতীকী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে। তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ওয়াকআউটে অংশ নেন বাংলাদেশ জাসদের মুশতাক হোসেন ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ।
তাদের প্রতিবাদী অবস্থান প্রসঙ্গে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “রাজনৈতিক দলের এই প্রতীকী প্রতিবাদ তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের অংশ হিসেবে করেছেন। আমরা তাদের বক্তব্য গুরুত্বসহকারে লিপিবদ্ধ করেছি এবং সরকার নিশ্চয়ই বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে।”
১০ মিনিট পর বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে দল তিনটির প্রতিনিধিরা আবার সংলাপে অংশগ্রহণ করেন এবং আলোচনায় যুক্ত হন।
সংলাপটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং অর্থনীতিবিদ ড. আইয়ুব মিয়া।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে এখন পর্যন্ত ২৭ জন নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাধারণ নাগরিক রয়েছেন।