📍 দুবাই | ২৬ জুলাই ২০২৫
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা কার্যক্রম স্থগিত থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি মালিকানাধীন ট্রাভেল ও ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা। এতে করে ভিসা আবেদন, টিকেট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, গাইড সেবা, পরিবহন ও অফিস পরিচালনাসহ পুরো সেক্টরেই কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পর্যটন উন্মুক্ত হলেও স্থায়ী হয়নি সেই সুযোগ
করোনার পর আমিরাত বাংলাদেশিদের জন্য পর্যটন ভিসা উন্মুক্ত করায় বহু বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ট্রাভেল ও ট্যুরিজম খাতে বিনিয়োগ করেন। দেশটির অভ্যন্তরে কয়েকশ ট্রাভেল এজেন্সি ও ডকুমেন্টেশন কোম্পানি গড়ে ওঠে, যারা দীর্ঘদিন ধরে পর্যটন-সংশ্লিষ্ট নানা সেবা দিয়ে আসছিল।
তবে গত কয়েক বছর ধরে একাধিক অনিয়ম ও ভিসার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসা কার্যক্রম সীমিত বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয় আমিরাত সরকার।
ব্যবসায়ীদের হতাশা
ঢাকা ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান হানাফি বলেন,
“একটা ভিসার ওপর লেখা থাকে ‘জেনারেল ম্যানেজার’, অথচ ওই ব্যক্তি কাজ করছেন নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে। এসব অনিয়মের কারণে আমিরাত সরকার ভিসা ইস্যুতে কঠোর হয়েছে।”
হলিডে ডেস্টিনেশনের মার্কেটিং ম্যানেজার মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান,
“বাংলাদেশ থেকে এখন আর কোনো পর্যটকই আসতে পারছেন না। নতুন করে কোনো ট্রাভেল লাইসেন্স ইস্যু করা যাচ্ছে না, ভিসাও মিলছে না। আমাদের ব্যবসার ওপর সরাসরি ধস নেমেছে।”
সিলভার স্মিথ কোম্পানির মালিক মোহাম্মদ রফিক বলেন,
“বাংলাদেশি পর্যটক একদমই বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের ট্যুরিজম মার্কেট একরকম ধ্বংস হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে এখন ইউরোপ ও ইন্দো-চায়না রিজিয়নের পর্যটকদের নিয়ে কাজ করছি।”
পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ?
বিভিন্ন সূত্র জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা গত কয়েক বছরে ৫০০-এর বেশি ট্রাভেল ও ডকুমেন্টেশন প্রতিষ্ঠান চালু করেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়েছে।
এই ভিসা-সংকট শুধু প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ফেলেনি, বরং কর্মসংস্থান হারিয়ে অনেক প্রবাসী কর্মচারীও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ব্যবসায়ীদের দাবি
ব্যবসায়ীরা দ্রুত এই সংকট নিরসনে বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তারা চান, সরকার কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে আমিরাত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাক, যেন আবারো বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা উন্মুক্ত হয় এবং পর্যটন খাত পুনরায় সচল হয়।