📍 ঢাকা | ২৬ জুলাই ২০২৫
দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) ব্রাজিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম এবং ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল গালিপোলো-এর মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এই আগ্রহের কথা জানান গালিপোলো।
বৈঠক-পরবর্তী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে বর্তমান বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ইতোমধ্যে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। এই বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
উচ্চ ট্যারিফের চাপে সমঝোতার প্রস্তাব
রাষ্ট্রদূত ড. তৌহিদুল ইসলাম বৈঠকে জানান, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ ট্যারিফ নীতির কারণে দু’দেশই প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে উভয় দেশের পারস্পরিক ট্যারিফ হ্রাস, ব্যাংকিং জটিলতা (বিশেষ করে এলসি খোলার সমস্যা) নিরসন এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে যৌথ রূপরেখা তৈরির প্রস্তাব করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি এ বিষয়ে একটি ধারণাপত্রও উপস্থাপন করেন।
ব্রাজিলের ইতিবাচক সাড়া
প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল গালিপোলো বাংলাদেশের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে আশ্বাস দেন,
“শিগগিরই ব্রাজিলের পক্ষ থেকে একটি সমঝোতা স্মারকের খসড়া বাংলাদেশে পাঠানো হবে।”
তিনি আরও জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় বার্ষিক ব্রাজিল-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’
রাষ্ট্রদূত ড. তৌহিদুল ইসলাম বলেন,
“এটি বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সংকোচনের প্রেক্ষাপটে এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্রাজিলের মতো একটি শক্তিশালী অর্থনীতির অংশীদার হওয়া আমাদের জন্য একটি বড় সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ আমেরিকার বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, পাটজাত পণ্য ও কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন দিগন্ত তৈরি হবে। পাশাপাশি ব্রাজিলের কৃষি ও প্রযুক্তি খাতেও বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়তে পারে।