📅 প্রকাশিত: ৩ আগস্ট ২০২৫ | প্রবাস বুলেটিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬২ জন ফিলিস্তিনি। শনিবার (২ আগস্ট) ভোর থেকে শুরু হওয়া এসব হামলার অধিকাংশই চালানো হয়েছে মানবিক সহায়তা বিতরণকেন্দ্র লক্ষ্য করে। নিহতদের অনেকেই সাহায্য নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে আল জাজিরা, স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রের বরাতে।
🔹 বিতর্কিত সংস্থার সহায়তা কেন্দ্রে হামলা
নিহতদের বেশিরভাগই গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর সহায়তা কেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন। সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রত্যক্ষ সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এটি প্রথম নয়—এর আগেও জিএইচএফ-এর সহায়তা পয়েন্টে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে।
🔹 ‘কৌশলগত বিরতি’ ঘোষণার বাস্তবতা প্রশ্নবিদ্ধ
ইসরায়েল গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছিল, কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় ‘কৌশলগত বিরতি’ দিয়ে মানবিক সহায়তা প্রবাহ সচল রাখা হবে। ২৭ জুলাই থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হলেও বাস্তবে তার প্রভাব সীমিত।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানায়—
-
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১০৫ জন ফিলিস্তিনি
-
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ১,৩৭৩ জন
-
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, একই সময়ে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৬৯ জনের, যাদের মধ্যে ৯৩ জন শিশু
🔹 মার্কিন চুক্তির নিরাপত্তা বাহিনী জড়িত থাকার অভিযোগ
গাজার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সহায়তা নিতে আসা মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তিতে থাকা মার্কিন কন্ট্রাক্টররা।
🔹 আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে, তবু সংকট অব্যাহত
জার্মানি, ফ্রান্স, জর্ডান, মিসর, আরব আমিরাত ও স্পেন আকাশপথে ত্রাণ সরবরাহ করছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
গাজার সরকারি তথ্য অফিস জানায়—
-
শনিবার গাজায় মাত্র ৩৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে
-
দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে প্রয়োজন কমপক্ষে ৬০০টি ট্রাক
ইউএনআরডব্লিউএ এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থার মতে,
“আকাশপথে ত্রাণ যতটা প্রতীকী, বাস্তব সহায়তার জন্য স্থলপথে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করাই জরুরি।”
🔹 সরাসরি সহায়তাকেন্দ্রেও হামলা
একইদিনে খান ইউনিসে ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি-এর সদর দপ্তরে ইসরায়েলি হামলায় একজন কর্মী নিহত এবং আরও তিনজন আহত হন। ভবনের প্রথম তলায় আগুন ধরে যায় বলে জানায় সংস্থাটি এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে।
🔹 “বাঁচতে চাইলে মরতে প্রস্তুত”
গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরা‘র সাংবাদিক হিন্দ খোদারি জানিয়েছেন—
“বাজারে প্রায় কিছুই নেই। যা সামান্য পাওয়া যাচ্ছে, তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। ফলে বহু মানুষ বাধ্য হয়ে জীবন ঝুঁকিতে ফেলে খাদ্য সংগ্রহ করছেন।”
📌 গাজার মানবিক বিপর্যয়কে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ আরও বাড়ছে। কিন্তু স্থলপথে সহায়তা না পৌঁছানো পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি অনিশ্চিত। প্রবাস বুলেটিন থাকবে ঘটনাস্থল ও বিশ্লেষণের সাথে পাঠকের পাশে।