প্রকাশের তারিখ: রবিবার, ৩ আগস্ট ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে একপক্ষীয় শুল্ক আরোপে আংশিক ছাড় দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ভারতীয় পণ্যে ২৫% শুল্ক আরোপের প্রস্তাবে সই করা হয়েছে, তবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাত এতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্ত ভারতের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ স্বস্তির ইঙ্গিত বহন করে।
মূল বিষয়সমূহ:
-
মূল রপ্তানি খাত শুল্ক মুক্ত:
ট্রাম্পের ঘোষিত ‘কালোতালিকা’ থেকে ভারতীয় ওষুধ, গাড়ির যন্ত্রাংশ, কপার ও অন্যান্য ধাতব সামগ্রীকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা ভারতের প্রধান রপ্তানি পণ্য। -
আগের ছাড় বহাল:
হোয়াইট হাউসের ১ আগস্ট প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২ এপ্রিল ঘোষিত শুল্ক অব্যাহতির তালিকা বহাল থাকবে। -
ভারতের কৌশলগত প্রতিক্রিয়া:
ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও সংসদে ইঙ্গিত দেন, বাণিজ্যচুক্তির আলোচনায় যেন ট্রাম্পের বক্তব্য প্রভাব না ফেলে সেদিকে লক্ষ্য রাখছে সরকার।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালও জানান, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক অটুট রয়েছে। -
জ্বালানি ও রাশিয়া ইস্যু:
ট্রাম্পের অভিযোগ অনুযায়ী ভারত পাকিস্তান থেকে জ্বালানি কিনতে বাধ্য হতে পারে—এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতীয় নেতারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরাসরি প্রতিক্রিয়া না দিলেও বিরোধী নেতা শশী থারুর এই দাবিকে ‘অবাস্তব’ বলে উল্লেখ করেন। -
বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা ও শুল্ক হার:
চামড়া, টেক্সটাইল ও মেশিনারির মতো খাতে শুল্ক অব্যাহতি না দেওয়া হলেও এ খাতগুলোতে ভারতীয় প্রতিদ্বন্দ্বীরা (বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া) প্রায় সমান শুল্কের মুখোমুখি। -
রাশিয়ার প্রভাব কমছে:
ভারতীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অস্ত্র আমদানিতে রাশিয়ার অংশ ২০১০–১৪ সময়ে যেখানে ছিল ৭২%, ২০২০–২৪ সালে তা কমে হয়েছে মাত্র ৩৬%।
জ্বালানি খাতে রাশিয়া থেকে আমদানি ২৫% কমেছে, আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০% বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ:
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ‘চাপ প্রয়োগ কৌশল’ নতুন নয়। তবে ভারত কৌশলে প্রতিটি পদক্ষেপ নিচ্ছে। চলতি বছরের অক্টোবর নাগাদ একটি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যচুক্তি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উপসংহার:
ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান ও শুল্ক হুমকির মাঝেও কৌশলগত নৈপুণ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে এগোচ্ছে ভারত। পরবর্তী কয়েক মাসে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।