প্রকাশের তারিখ: ১১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত প্রায় পৌনে দুই বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। একই সময়ে কানাডা ও ইউরোপের প্রধান নয়টি বাজার মিলিয়ে রপ্তানি আয় কমেছে ৮.৭৯ শতাংশ। তবে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, চীন, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের নতুন বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সার্বিকভাবে এ খাতে প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয়েছিল ২০৭ কোটি ডলারের, যা ডিসেম্বর প্রান্তিকে কমে দাঁড়ায় ১৯৭ কোটি ডলার। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে সামান্য বেড়ে ২১৬ কোটি ডলার হলেও এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে আবার কমে হয় ১৭৩ কোটি ডলার। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে প্রান্তিকভিত্তিক রপ্তানি আয় ছিল যথাক্রমে ১৮৫ কোটি, ১৯৯ কোটি, ১৯০ কোটি ও ১৮১ কোটি ডলার—যা সামগ্রিকভাবে একটি নিম্নমুখী ধারা নির্দেশ করছে।
প্রধান বাজারে চিত্র
প্রধান নয়টি বাজারের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেই সর্বাধিক রপ্তানি হয়েছে—গত প্রান্তিকে ১৮১ কোটি ডলার। এরপর জার্মানি (১১৫ কোটি ডলার), যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, কানাডা ও বেলজিয়ামের অবস্থান। তবে নতুন বাজার যেমন জাপান, অস্ট্রেলিয়া, চীন এবং আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুল্ক কাঠামো ও প্রতিযোগিতা
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রায় সমপর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ ও অধিকাংশ প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের জন্য শুল্কহার ১৯–২০ শতাংশ, তবে ভারতে শুল্ক ৫০ শতাংশ। ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা ও কম্বোডিয়াও প্রধান প্রতিযোগী হিসেবে রয়েছে। সরকার এ খাতে অতিরিক্ত নীতিসহায়তা দিচ্ছে, যা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
চ্যালেঞ্জ ও করণীয়
বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করেছে যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও বাণিজ্যনীতির পরিবর্তন আগামীতে রপ্তানি খাতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। এছাড়া ভারত সম্প্রতি স্থলপথে পোশাক আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় সে বাজারে রপ্তানি কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কাঠামোও একটি স্থায়ী চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।