স্টাফ রিপোর্টার | প্রবাস বুলেটিন
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মূল বেতনের কমপক্ষে ২০ শতাংশ হারে মাসিক বাড়িভাড়া ভাতা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে। এ দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের কাছে ব্যয়ের হিসাব চেয়ে জানিয়েছে, প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ শেষে দুপুরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক-২ শাখার উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের মূল বিষয়
উপসচিব মোরশেদ আলী জানান, শিক্ষকরা বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা এবং চিকিৎসা ভাতা বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছেন। শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের প্রস্তাব শুনে মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া বাস্তবায়নে কত খরচ হবে, সেই হিসাব কয়েক দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে দিতে বলেছেন।
বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী বেতন পান এবং এর সঙ্গে মাসে ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পেয়ে থাকেন। সম্প্রতি উৎসব ভাতা বছরে দুইবার ৫০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে এবং বৈশাখী ভাতা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে প্রদান করা হয়।
সরকারের উদ্যোগ
মোরশেদ আলী আরও জানান, “উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা, বাড়িভাড়া মাসিক ১ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা করা এবং চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা করার সম্ভাবনা যাচাইয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। জবাব পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, “জাতীয়করণের দাবি থাকলেও সরকারের সক্ষমতা বিবেচনায় আমরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দেওয়ার দাবি তুলেছি।” তিনি জানান, শিক্ষা উপদেষ্টা বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ শিক্ষক ফোরামের সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ্ রাজু বলেন, “আমাদের দাবি যৌক্তিক বলে শিক্ষা উপদেষ্টা স্বীকার করেছেন। এখন ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার পর মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেবে।”
কর্মসূচির ঘোষণা
বৈঠক শেষে শিক্ষকরা সরকারকে এক মাস সময় দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
-
১৪ সেপ্টেম্বর: সারাদেশে প্রতিটি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অর্ধদিবস কর্মবিরতি
-
১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর: পূর্ণদিবস কর্মবিরতি
-
১২ অক্টোবর থেকে: জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি (দাবি পূরণ না হলে)
শিক্ষক নেতাদের মতে, সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ না এলে তারা দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।