প্রকাশিত: ১৮ আগস্ট ২০২৫ | ঢাকা
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি শুধু মাইক্রোফিন্যান্স কার্যক্রমকে টিকিয়ে রাখেনি বরং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গ্রহণের মাধ্যমে এটিকে আরও বিস্তৃত করেছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে তিন দিনের সফর শেষে বারনামাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান। সাক্ষাৎকারটি নেন সংস্থাটির প্রধান সম্পাদক আরুল রাজু দুরার রাজ, আন্তর্জাতিক বিভাগের সম্পাদক ভুন মিয়াও পিং এবং ইকোনমিক সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক কিশো কুমারি সুচেদারাম।
ডিজিটাল রূপান্তর মহামারির প্রভাবেই
ড. ইউনূস বলেন, মহামারির সময় আরোপিত বিধিনিষেধ সরাসরি কার্যক্রম চালানো অসম্ভব করে তোলে। তাই সাপ্তাহিক ঋণ পরিশোধ, নতুন আবেদন ও দলীয় সভাগুলো ভার্চুয়ালি পরিচালিত হয়। ঋণগ্রহীতারা ফোন ও ডিজিটাল ট্রান্সফারের মাধ্যমে কিস্তি পরিশোধ শুরু করেন, আর বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয় জুম প্ল্যাটফর্মে।
“আমাদের কাছে এটি ছিল এক অনিবার্য রূপান্তর। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, কার্যক্রম এতটাই কার্যকর ছিল যে মহামারি শেষে অনেকেই পুরোপুরি আগের পদ্ধতিতে ফিরে যাননি,” বলেন তিনি।
বিদেশ থেকেও নির্বিঘ্ন সেবা
তিনি আরও জানান, নরওয়েতে অবস্থানরত গ্রামীণ ব্যাংকের একজন কর্মী অনলাইনের মাধ্যমে নির্বিঘ্নে ঋণ সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যান। এতে প্রমাণিত হয়েছে, ভার্চুয়াল ব্যবস্থাতেও সেবার মান বজায় রাখা সম্ভব।
বৈশ্বিক ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির অনুপ্রেরণা
৮৫ বছর বয়সী এই নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেন, “ডিজিটালাইজেশন আমাদের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসেছে, প্রকৃতির চাপেই আসতে হয়েছে। এখন বিশ্বের অন্যান্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচিও একই ধারা অনুসরণ করছে।”
গ্রামীণ ব্যাংক ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ক
১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্র, বিশেষ করে নারীদের ক্ষমতায়নের পথ দেখিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৯ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ এ সেবা নিচ্ছেন।
মালয়েশিয়াই প্রথম দেশগুলোর একটি, যারা ১৯৮৭ সালে আমানাহ ইখতিয়ার মালয়েশিয়ার (AIM) মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংক মডেল গ্রহণ করে। আজও প্রতিষ্ঠানটি নিম্নআয়ের পরিবারগুলোকে ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে সহায়তা করছে।
👉 নোট: ড. ইউনূসের মতে, কোভিড-১৯ এর বাধ্যতামূলক পরিবর্তন ভবিষ্যতের মাইক্রোফিন্যান্স খাতের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।