প্রকাশের তারিখ: ১৮ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশ অর্থনীতি স্থিতিশীলতার নতুন ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। সর্বশেষ অর্থনৈতিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল লেনদেনের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন এবং রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ স্পষ্ট হয়েছে।
প্রধান ইতিবাচক দিকগুলো
-
ডিজিটাল লেনদেন:
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২৫ সালের মার্চে লেনদেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে ১৫৩,৭৫৭ কোটি থেকে ১,৭৮,১২৭ কোটি টাকার মধ্যে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে ই-কমার্স লেনদেনে বছরে প্রায় ৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। -
কৃষি ও শিল্পখাত:
২০২৫ সালের মে মাসে কৃষিঋণ বিতরণ রেকর্ড ৩,৬৫৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা হয়। শিল্পোৎপাদনেও স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে, যেখানে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে উৎপাদন বৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১১.৩৯ শতাংশে। -
বৈদেশিক খাতের উন্নতি:
২০২৪-২৫ অর্থবছরে চলতি হিসাবের ভারসাম্য দাঁড়ায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উদ্বৃত্তে—গত পাঁচ বছরে এটি প্রথম ইতিবাচক অঙ্ক। সামগ্রিক ভারসাম্যও রেকর্ড ৩.৩ বিলিয়ন ডলার উদ্বৃত্ত হয়েছে। -
রপ্তানি ও রেমিট্যান্স:
২০২৫ সালের জুলাইয়ে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৭৭ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। একই মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ হয়েছে ২৪৭ কোটি ডলার, যা বছরওয়ারি ২৯.৫ শতাংশ বেশি।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সতর্কতা
জিইডি সতর্ক করেছে, চালের দাম খাদ্য ও সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির ওপর বড় চাপ তৈরি করছে।
-
জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান দাঁড়িয়েছে ৫১.৫৫ শতাংশে, মে মাসে যা ছিল ৪০ শতাংশ।
-
চিকন, মাঝারি ও মোটা চালের দাম গড়ে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, অনিয়মিত আবহাওয়া চালের দাম আরও বাড়াতে পারে। এজন্য স্বল্পমেয়াদে আমদানি ত্বরান্বিত করা, সরকারি সংগ্রহ কার্যক্রম বাড়ানো এবং ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) কর্মসূচি সম্প্রসারণের সুপারিশ করেছে জিইডি।
সামগ্রিক চিত্র
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে অর্থনীতির বহুমুখী চ্যালেঞ্জগুলোকে ‘ভারসাম্যপূর্ণ উপায়ে’ মোকাবিলা করা হয়েছে। টানা দ্বিতীয় মাসে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের নিচে থাকায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ইতিবাচক বার্তা মিলেছে।
📌 উপসংহার: জিইডি’র মতে, সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা দিলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কৃষি খাতে ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।